ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:৪৮:২৯ এএম

জেন্ডার বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে ৫ বিষয়

২৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:১৯ এএম

জেন্ডার বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে ৫ বিষয়

প্রতি বছরের মতো আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও জেন্ডার বাজেট তৈরি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে একটি প্রতিবদনও জাতীয় সংসদে উপস্থাপনার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনাসহ যে ৫টি বিষয়কে জেন্ডার বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হবে এর মধ্যে রয়েছে-অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কার্যক্রম, জেন্ডার গ্যাপকে চিহ্নিত করে প্রকল্প গ্রহণ করা, উদ্ভাবনী চিন্তা ও ধারণাকে অন্তর্ভুক্ত ও গ্রুপভিত্তিক ফরমেট অনুসরণ। সমতাভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন দর্শন হিসেবে প্রতিফলন করাই হবে এ জেন্ডার বাজেটের উদ্দেশ্য বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

 

জেন্ডার বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, উৎপাদন, শ্রমবাজার ও আয়বর্ধক কাজে নারীর অংশগ্রহণ, সরকারি সেবা প্রদানের মাধ্যমে নারীর সুযোগ বাড়ানো বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হবে। তবে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষে এককভাবে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলেই গ্রুপভিত্তিক মন্ত্রণালয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রুপ-১ অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি। যেখানে ১২টি মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করবে।

 

মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হচ্ছে-প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এসব মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় যে গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে তা মূলত আইন, পরিকল্পনা দলিল ও নীতিমালার আলোকে নারীদের উন্নয়নের বিষয়। এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় দফতরভিত্তিক নারী ও পুরুষের তথ্যসহ উপকারভোগীর তথ্যাদি।

 

জানা গেছে, এ গ্রুপে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ রয়েছে তাদের মোট বাজেটে নারীর হিস্যা। একই সঙ্গে অগ্রাধিকারসম্পন্ন ব্যয় ও কর্মসূচি পাশাপাশি নারী কল্যাণে এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সাম্প্রতিককালে অর্জিত সাফল্য তুলে ধরা হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, নারী উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করা হবে।

 

জানা গেছে, গ্রুপ-২ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মোট ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এ গ্রুপের বিষয় হচ্ছে-উৎপাদন, শ্রমবাজার ও আয়বর্ধক কাজে নারীর অংশ্রগ্রহণ। মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে রয়েছে-জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এ গ্রুপে মূলত নারী উন্নয়নে সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছাড়াও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করা হবে। শুধু তাই নয়, নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন তা চিহ্নিত করে আগামী দিনের করণীয়গুলো তুলে ধরা হবে।

 

গ্রুপ-৩ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মোট ২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এ গ্রুপের কার্যপরিধি হচ্ছে সরকারি সেবা প্রদানের মাধ্যমে নারীর সুযোগ বৃদ্ধি। এ গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে রয়েছে-প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, নির্বাচন কমিশন, আইন ও বিচার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

 

এ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত থাকবে দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্ব ও নারী উন্নয়নে মন্ত্রণালয়ের নেওয়া পদক্ষেপগুলো সাধারণ বর্ণনা। এ ছাড়াও অন্যান্য গ্রুপের মতো এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য নারী উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি নারী কল্যাণে এ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাম্প্রতিক সময়ের অর্জিত সাফল্যগুলো।

 

এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সরকার জাতীয় জীবনে সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ, সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্য নিয়ে এ জেন্ডার বাজেটের তৈরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এ জেন্ডার বাজেট তৈরি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরেও তা তৈরি করা হচ্ছে। তবে প্রত্যেক অর্থবছরের জেন্ডার বাজেটে আগামী দিনের করণীয় সম্পর্কে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়।

 

সে সুপারিশগুলোর মধ্যে বাস্তবায়ন হয়নি এমন ক্ষেত্রে বাজেট প্রয়োজনীয়তা বরাদ্দ করা হয়। পাশাপাশি কোনো কোনো কার্যক্রম বা কর্মসূচি সম্প্রসারণের প্রয়োজন রয়েছে কি না তা বিবেচনা করা হয়। আর কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ জেন্ডার বিষয়ক কোনো ধরনের উদ্ভাবনী চিন্তাপ্রসূত কোনো ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করে তাও গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় আনা হয়।

জেন্ডার বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে ৫ বিষয়