ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৮:০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরাতে রাজি হননি জর্ডানের বাদশাহ
ট্রাম্প বলেন, “আমরা জর্ডান এবং মিশরকে অনেক টাকা দিই। তবে আমাকে সেই হুমকি দিতে হবে না। আমি মনে করি আমরা এর ঊর্ধ্বে আছি।”
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৮:০ পিএম
![ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরাতে রাজি হননি জর্ডানের বাদশাহ](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/02/12/20250212151548_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
গাজার বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনা হিসেবে জর্ডানকে তাদের গ্রহণের জন্য বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ।
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাব করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাকে পুনরায় নির্মাণ করে একে 'মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরায়' পরিণত করার পরিকল্পনা থেকে তিনি সরবেন না। কিন্তু এই পরিকল্পনার আওতায় গাজার সাধারণ জনগণকে কোথায় স্থানান্তর করা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানাননি তিনি।
ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনের পরিকল্পনার অধীনে ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে পারবেন না, এমন মন্তব্য করে তিনি আরব বিশ্বকে ক্ষুব্ধ করেছেন। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে বিধ্বস্ত এ অঞ্চল নিয়ে তার এই দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, "আমরা এটাকে গ্রহণ করব, এটাকে ধরে রাখব, এটাকে ভালোবাসব। আমরা এটাকে এমনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব, যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।" তিনি দাবি করেন, তার পরিকল্পনা অঞ্চলটিতে 'শান্তি আনবে'।
ট্রাম্প বলেছেন, "আমি বিশ্বাস করি, আমরা জর্ডানে একটি জমির অংশ পাবো। আমি বিশ্বাস করি, আমরা মিশরে একটি জমির অংশ পাবো।" তিনি আরও বলেন, "আমরা অন্য কোথাও কিছু করে থাকতে পারি। কিন্তু আমি মনে করি, আমাদের আলোচনা শেষ হলে আমরা একটি জায়গা পাবো, যেখানে তারা খুব সুখী এবং নিরাপদভাবে বসবাস করবে।"
ট্রাম্প আরও বলেন, "আমরা জর্ডান এবং মিশরকে অনেক টাকা দিই। আসলে অনেকটা দিই। তবে আমাকে সেই হুমকি দিতে হবে না। আমি মনে করি আমরা এর ঊর্ধ্বে আছি।"
বাদশাহ আবদুল্লাহ আগে বলেছেন, তিনি ভূমি সংযুক্তকরণ এবং ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো পদক্ষেপে রাজি নন। গাজা পরিকল্পনা কার্যকর হওয়ার পর, তিনিই প্রথম আরব নেতা যিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
দুই নেতা একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিলেন। তবে, গাজা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য বাদশাহ আবদুল্লাহকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। বিশেষত, জর্ডানে ফিলিস্তিনিদের ওই জমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকারের দাবি সংবেদনশীল। কারণ এটি সেই জমি, যেখানে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠা সময়ে যুদ্ধের কারণে অনেকেই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এক পর্যায়ে, ট্রাম্প বাদশাহ আবদুল্লাহকে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্ররোচিত করেন। রাজা বলেছিলেন, তিনি তার দেশের জন্য সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি জানান, জর্ডান গাজা থেকে ২ হাজার অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসার জন্য গ্রহণ করবে। ট্রাম্প এই প্রস্তাব প্রশংসা করেন।
তিনি আরও বলেন, আরব দেশগুলো পালটা প্রস্তাব নিয়ে ওয়াশিংটনে আসবে। বাদশাহ আব্দুল্লাহ আরও বলেন, "বিষয়টি হলো, কীভাবে এই কাজটি এমনভাবে করা যায় যা সবার জন্য উপকারী হবে।" তবে তার এ বক্তব্যে ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে স্পষ্টভাবে সমর্থন বা বিরোধিতা করেছেন কিনা তা বুঝা যায়নি।
ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে গ্রহণে আব্দুল্লাহকে উৎসাহ দেন। তবে উত্তরে আব্দুল্লাহ বলেন, "তিনি তার দেশের জন্য সেরাটাই করবেন। তবে তিনি গাজা থেকে দুই হাজার অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসার জন্য গ্রহণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ প্রস্তাবের প্রশংসা করেছে ট্রাম্প।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি পরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল-মামলাকা টিভিকে জানান, গাজার জনগণকে বাস্তুচ্যুত না করেই মিশরীয় নেতৃত্বাধীন আরব দেশগুলোর গাজা পুনর্গঠনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে।
![ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরাতে রাজি হননি জর্ডানের বাদশাহ](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)