ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:০ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৮ শতাংশ
৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:০ এএম
![ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৮ শতাংশ](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/04/20250104104408_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং শ্রম অসন্তোষের মতো চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। বিশেষ করে ডিসেম্বরে একক মাসের হিসাবে রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ, যা দেশের রপ্তানি খাতের জন্য ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট রপ্তানি পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ ডলার, যা প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার সমান। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৭৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ, যা ১ হাজার ৯৭৯ কোটি ডলার থেকে দাঁড়িয়েছে ২২৩ কোটি ডলার বেশি।
দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে শ্রম অসন্তোষ সত্ত্বেও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, "বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে উদ্যোক্তারা লক্ষ্যচ্যুত হননি। তারা উৎপাদন এবং রপ্তানি বজায় রাখতে সব ধরনের সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন।" তিনি আরও বলেন, মৌলিক পণ্যের সঙ্গে মূল্য সংযোজিত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি এবং উচ্চমূল্যের পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে সুদের হার কিছুটা কমেছে, যা এই অঞ্চলের চাহিদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের নীতি কমপ্লায়েন্স, পরিবেশসম্মত উৎপাদন কাঠামো এবং সার্কুলার আরএমজি প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পোশাক খাতের প্রতি পশ্চিমা ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদের আস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
তৈরি পোশাকের পাশাপাশি, অন্যান্য রপ্তানি খাতেও প্রবৃদ্ধি এসেছে। ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চিংড়ি ও অন্যান্য হিমায়িত মাছের রপ্তানি বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি, যা ২৫ কোটি ডলারের কাছাকাছি। কৃষিপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১৪ শতাংশ, যার পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি ডলার। এছাড়া, ওষুধের রপ্তানি ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ডলার, এবং চামড়া ও চামড়াপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ২৪ শতাংশ, যা ৫৮ কোটি ডলারের সমান।
অন্যদিকে, প্রায় ছয় বছর পর পাট এবং পাটপণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে, ১ শতাংশের কিছু বেশি, এবং এর রপ্তানি পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি ডলার।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, "নতুন বছরে রপ্তানি খাত আরও ভালো করবে। বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা ও গুণমানের প্রতি আস্থা বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলাফল ইতিবাচকভাবে প্রতিফলিত হবে।"
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখতে পারলে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ অংশে রপ্তানি আয় আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে, রপ্তানি খাতের ভাল প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক, চিংড়ি, ওষুধ, চামড়া ও পাটপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সহায়ক হতে পারে।
এছাড়া, রপ্তানি আয় বৃদ্ধির এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে আরও নীতিগত সহায়তা এবং ব্যবসা-বানিজ্যের পরিবেশ সহজতর করার পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
![ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৮ শতাংশ](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)