ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়: অর্থনীতি ও সামাজিক ইস্যুতে তার প্রতিশ্রুতি ছিল বড় ভূমিকা
৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩৭ এএম
![ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়: অর্থনীতি ও সামাজিক ইস্যুতে তার প্রতিশ্রুতি ছিল বড় ভূমিকা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/11/07/20241107093715_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর তার এটি ছিল একটি নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। প্রায় সব সুইং স্টেটে জয়লাভ করে তিনি তার শাসনের পুনরুদ্ধার করেছেন। তবে ট্রাম্পের এই জয়ের পেছনে মূল কারণ কী ছিল, তা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। অধিকাংশ মার্কিন ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মতে, ট্রাম্পের জয় গত কয়েক বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও তার প্রতিশ্রুতি থেকে এসেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল অর্থনীতি। বেশিরভাগ আমেরিকান জানাচ্ছিলেন, তারা উচ্চ দ্রব্যমূল্যের চাপের মুখে লড়ছেন এবং ১৯৭০-এর দশকের পর সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তারা এখনো সামাল দিতে পারছেন না। এমন অবস্থায় ভোটাররা পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে ছিলেন। তারা ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে বাইডেন প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, আর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও বাইডেনের প্রশাসন থেকে নিজেকে আলাদা করতে পারেননি।
কমলা হ্যারিসের পারফরম্যান্স ভালো হলেও, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। অনেক মার্কিন ভোটার মনে করেন, চার বছর আগে ট্রাম্পের আমলে তারা ভালো ছিলেন, যা এবার ট্রাম্পের দিকে তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
কমলা হ্যারিসের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নারী হওয়া, যেটি তার প্রচারণার জন্য প্রতিকূলতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, ট্রাম্পের শিবিরের পক্ষ থেকে তাকে প্রায়ই অবমাননা করা হয়েছে। গর্ভপাত এবং অভিবাসন ইস্যু নিয়ে হ্যারিস প্রচারণা চালালেও, সেইসব ইস্যু অর্থনৈতিক সংকটের সামনে গুরুত্ব হারিয়ে গেছে।
এছাড়া, এবারের নির্বাচনে লাতিন এবং আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। একাধিক বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, লাতিন ভোটাররা ট্রাম্পের প্রতি আস্থা রেখেছেন, যদিও পুয়ের্তো রিকো নিয়ে ট্রাম্পের বর্ণবাদী কৌতুকের পরও তার জনপ্রিয়তা কমেনি। আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটেও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে, যা সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে যেত। ট্রাম্প নিজেকে রিপাবলিকান পার্টির এক ‘সহায়ক’ প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন, এমনকি তিনি এই সম্প্রদায়গুলির জন্য এক ‘স্পেস’ তৈরি করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের জয়ের পেছনে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনও একটি বড় ভূমিকা রেখেছে। অনেক মার্কিন নাগরিক বিশেষ করে আরব-আমেরিকানরা বাইডেন প্রশাসনের এই ইস্যুগুলিতে ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ ছাড়া আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা এবং বাইডেনের নীতির বিরুদ্ধে সমালোচনা ট্রাম্পের সমর্থনে কাজ করেছে।
অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন একটি অলৌকিক ঘটনা। তবে, ভোটারদের জন্য ট্রাম্পই ছিলেন সেই নেতা, যার আমলে তারা আর্থিক সুরক্ষা এবং স্থিতিশীলতা অনুভব করেছিলেন। এর বিপরীতে, বাইডেন প্রশাসন এবং কমলা হ্যারিসের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে—এটাই হয়তো তাদের ভোটের সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ।
- ট্যাগ সমূহঃ
- ডোনাল্ড ট্রাম্প
- অর্থনীতি
- প্রতিশ্রুতি