ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:১৮:২৫ এএম

দেশে অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে রেমিটেন্স

২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:২৩ এএম

দেশে অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে রেমিটেন্স

ছবি: সংগ্রহ

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, "বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক চাকচিক্যের মূলে রয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। এটি দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।"


তিনি আরও বলেন, "অভিবাসী শ্রমিকদের দেশপ্রেম ও আন্দোলনে তাদের সমর্থনের কারণে অতীতে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ত্বরান্বিত হয়েছিল। প্রবাসীরা শর্তহীনভাবে প্রতি বছর ২৪-২৫ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠালেও সম্প্রতি আইএমএফ মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে নানা শর্ত আরোপ করেছে।"

 

অধ্যাপক আহমেদ রেমিট্যান্স বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনার হার বাড়ানোর সুপারিশ করেন। পাশাপাশি তিনি অভিবাসীদের সন্তানদের স্কুল-কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব তুলে ধরেন।


ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দেশের মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ২৫ শতাংশের কর্মসংস্থান হয় বৈদেশিক অভিবাসনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, "যদি এই অভিবাসন ব্যবস্থা না থাকত, তবে দেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরও ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেত।"

 

তিনি অভিবাসী কর্মীদের "সোনার সন্তান" আখ্যা দিয়ে বলেন, "তাদের শ্রমে-ঘামে উপার্জিত অর্থ আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি করেছে এবং বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে।"


কিরণ উল্লেখ করেন, "পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে জুলাই বিপ্লবের সময় প্রবাসী আয় নেমে আসে ১.৯১ বিলিয়ন ডলারে। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এই আয় ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।"


তিনি জানান, প্রবাসীরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আওয়ামী সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়ে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন।


কিরণ আরও বলেন, "পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে কিছু ব্যাংক মালিক তাদের ফরেন রেমিট্যান্স হাউসের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বিদেশে রেখে দিত। পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের ফলে এই অনৈতিক কাজ বন্ধ হয়েছে, যা রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।"

 

তিনি উল্লেখ করেন, "বিগত সরকারের মন্ত্রী, আমলা, এবং ব্যবসায়ীদের লুণ্ঠিত অর্থ বিদেশে পাচারের প্রবণতা বন্ধ হওয়াও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।"


অভিবাসন প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের কার্যকর ভূমিকার ওপর জোর দেন তিনি।

 

অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ড. জামিল আহমেদ, সাংবাদিক মিরাজ হোসেন গাজী, এবং সাংবাদিক আরাফাত আরা।


চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ দলকে সনদপত্র, ট্রফি, এবং যথাক্রমে ৩০ হাজার ও ২০ হাজার টাকার অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়।


প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। তাদের এই অবদানকে যথাযথ মূল্যায়ন এবং অভিবাসন প্রক্রিয়াকে নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কার্যকর উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ।

দেশে অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে রেমিটেন্স