ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:২২:২২ পিএম

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

১ জুন, ২০২৪ | ৭:০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

দেশে এক দশকে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ

১ জুন, ২০২৪ | ৭:০ পিএম

দেশে এক দশকে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ

আজ ১ জুন। বিশ্ব দুগ্ধ দিবস। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুরুত্ব বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরা এবং দুধ উৎপাদনের ব্যাপারে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করে ডেইরি শিল্পের প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপন করা হয়।

 

২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ১ জুনকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ওই বছর থেকে বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্তকরণে উৎসাহিত দিতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদা সাথে দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।


বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪ উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এ অনুষ্ঠানে দেশের নির্বাচিত সফল দুগ্ধ খামারি/ উদ্যোক্তা! প্রতিষ্ঠানকে ডেইরি আইকন হিসেবে সেলিব্রেশন করা হবে।


পুষ্টিবিদমতে, সুস্থ্-সবল শরীরের জন্য সব বয়সী মানুষেরই নিয়মিত দুধ পান করা উচিত। দুধের মধ্যে ভিটামিন সি ছাড়া রয়েছে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান।

 

দুধের উপকারিতা সম্পর্কে পুষ্টি বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, পুষ্টি গুণে দুধ হলো একটি সেরা খাবার। দুধ হলো ক্যালসিয়ামের খুব ভালো একটি উৎস। আর ক্যালসিয়াম সব বয়সের মানুষের জন্য জরুরি উপাদান। আমরা জানি, মানবজীবনের শুরু হয় দুধ দিয়ে। শিশু কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের জন্য দুধ ভীষণ প্রয়োজনীয় খাবার। যেসব শিশু জন্মের পর ঠিকভাবে দুধ খেতে পায় না, তারা অধিকাংশ সময় কোয়াশিয়রকর (kwashiorkor), ম্যারাসমাস (Marasmus) নামক অপুষ্টিজনিত অসুখে আক্রান্ত হয়।

 

দুধের উৎপাদন বেড়েছে

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর দেশে তরল দুধের উৎপাদন বেড়েছে ১৩ গুণ। আর গত এক দশকে বাংলাদেশে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬ গুণেরও বেশি। স্বাধীনতা উত্তর ১৯৭১-৭২ অর্থ বছরে দুধ উৎপাদন ছিল ১০ লাখ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দুধ উৎপাদন হয়েছে ১৪০ দশমিক ৬৮ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দুধ উৎপাদন ১৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ২৫০ মিলি হিসেবে দেশে দুধের চাহিদা ১৫৮ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন। এ হিসেবে দুধের ঘাটতি রয়েছে ২৫ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিক টন।

 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে দুগ্ধ খামারির সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। ২০২২-২৩ বছরে ১৪০ দশমিক ৬৮ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম সারির দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলো ৭-৮ লাখ টন দুধ প্রক্রিয়াজাত করে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুত করছে।


প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে দুধের মূল উৎস গরু। শতকরা ৯০ ভাগ দুধ আসে গরু থেকে। ৮ শতাংশ ছাগল এবং ২ শতাংশ আসে মহিষ থেকে।

 

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বেশ কয়েক বছর ধরে ছাগলের দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে মোট দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২৩তম। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ দুধ উৎপাদন হয় এশিয়ায়।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুযায়ী, একজন মানুষের দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা দরকার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে দিনে মাথাপিছু দুধ উৎপাদিত হয় ২২১ দশমিক ৮৯ মিলিলিটার।


প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এর অগ্রগতি প্রতিবেদন (জানুয়ারি ২০১৯- ডিসেম্বর ২০২৩) অনুযায়ী দেশে দুধের ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে মিল্ক কালেকশন সেন্টার, প্রসেসিং জোন উল্লেখ্যযোগ্য।

দেশে এক দশকে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ