ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:২২:০৪ এএম

দেশে তীব্র গ্যাস সংকটের আশঙ্কা

৩১ মে, ২০২৪ | ২:০ পিএম

দেশে তীব্র গ্যাস সংকটের আশঙ্কা

বঙ্গোপসাগরে থাকা দুটি ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনালের একটি বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে বন্ধ হয়ে যাওয়া টার্মিনালটির মালিকানায় রয়েছে সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড। টার্মিনালটি থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হত। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে দেশে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিতে পারে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। 

 

এদিকে, সামিটের জেনারেল ম্যানেজার (পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া) মোহসেনা হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় কক্সবাজারের মহেশখালীতে একটি ভাসমান পন্টুন সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোং (প্রাইভেট) লিমিটেডের ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) আঘাত করে। এতে এফএসআরইউর ব্যালাস্ট ওয়াটার ট্যাঙ্কের ক্ষতি হয়।


স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রোটোকল অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই সামিটের একজন বিশেষজ্ঞ সার্ভেয়ার ঘটনাস্থলে যান। সার্ভেয়ারের পরিস্থিতির সম্পূর্ণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সামিট রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) এবং পেট্রোবাংলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে। এলএনজি পরিচালনার সংবেদনশীল এবং বিস্ফোরক প্রকৃতি এবং জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে এফএসআরইউর জাতীয় গুরুত্বের কারণে সামিট স্বাভাবিক কার্যক্রম ফের শুরু করার আগে বিষয়টি সংশোধনে সম্পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করছে।


জানা গেছে, সামিটের সার্ভেয়ার ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান টার্মিনালটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, সরকারের লোকজনসহ সংশ্লিষ্টরা সরেজমিন পরিদর্শন করে যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ এ টার্মিনাল ঠিক হবে, সে ব্যাপারে কোনো পক্ষই কিছু বলতে পারছে না।


বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে সামিটের টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মাত্র ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হয়েছে। এটি সরবরাহ করা হয়েছে অন্য টার্মিনাল থেকে, যার মালিকানায় রয়েছে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি।

 

এদিকে, জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় শুরু হয়েছে গ্যাসের সংকট। বিশেষ করে চট্টগ্রামে পরিস্থিতি খুবই নাজুক। শিল্পকারখানায় গ্যাসের চাপ কমে গেছে অনেকটা। ঢাকার পরিস্থিতিও অবনতি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ থেকে আরও তীব্র হবে গ্যাসের সংকট।


এ ছাড়া একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ধস নামবে। এমনিতেই জ্বালানি সংকটের কারণে গ্যাসভিত্তিক অনেক কেন্দ্র ক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। এখন একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে লোডশেডিং বেড়ে গেছে।

 

পিজিসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, সন্ধ্যায় পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালানো হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় উচ্চদামের তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালানো হবে। এদিকে, গ্যাসের প্রবাহ এবং চাপ কমে যাওয়ায় সিএনজি স্টেশনে গাড়ির রিফুয়েলিং করতেও ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে।

দেশে তীব্র গ্যাস সংকটের আশঙ্কা