ঢাকা শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ - ১:৪৭:০৯ পিএম

পাকিস্তানের জমিতে চীনের সামরিক পরিকল্পনা

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১:৫০ পিএম

পাকিস্তানের জমিতে চীনের সামরিক পরিকল্পনা

ছবি: সংগ্রহ

মো সোহাগ : লাউঞ্জে নেই কোন যাত্রী রানওয়েতে নেই বিমান তবুও এটি বিমানবন্দর বলছি পাকিস্তানের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নতুন গদার বিমানবন্দরের কথা। ২৪০ মিলিয়ন ডলারের তৈরিকৃত বিমানবন্দরটির সম্পূর্ণ অর্থায়ন করেছে চীন। ২০২৪ সালের অক্টোবরে ভ্যালুসস্থান প্রদেশের উপকূলীয় শহর গদারে বিমানবন্দরটির কাজ সম্পন্ন হয়। চার মাস পেরিয়ে গেলেও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না করায় বিমানবন্দরটি পাকিস্তানবাসীর জন্য রহস্যে পরিণত হয়েছে।

 

গেল দশক থেকে চায়না পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোর সিপিইসি বাস্তবায়নের জন্য বেলুচিস্তানে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে শি জিনপিং সরকার। মূলত এই করিডরের মাধ্যমে পশ্চিম জিনজিয়ান প্রদেশকে সংযুক্ত করা হবে আরব সাগরের সঙ্গে। শেহেবাজ শরীফ প্রশাসন বলছে সিপিইসি প্রকল্পের আওতায় গদারে লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। যদিও বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। এখনো জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে শহরটি সংযুক্ত নয়। বিদ্যুতের জন্য শহরটি প্রতিবেশী ইরান ও সৌর ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। এমনকি বিশুদ্ধ পানির সংকটও তীব্র। গদারের মোট বাসিন্দা ৯০ হাজার।

 

অন্যদিকে একমাত্র বিমানবন্দরে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪ লাখ। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও অত্যাধুনিক বিমানবন্দটির জন্য কেন এই শহর টিকেই বেছে নেওয়া হলো? আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক আজিম খালিদের দাবি বিমানবন্দরটি পাকিস্তান কিংবা গদারের জন্য নয়। এটি তৈরি করা হয়েছে চীনের জন্য। সিপিইসি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বেলুচিস্থান ও গদার শহরে নিরাপত্তার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে যাত্রী বিমান বিহীন অত্যাধুনিক এই বিমানবন্দর।

 

পাকিস্তান সরকার ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বেলুচদের ওপর শোষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের যদিও বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটির সরকার। তাই অস্ত্র হাতে চরমপন্থার পথ বেছে নিয়েছে সাধারণ বেলুচরা। চীনের বিনিয়োগ রক্ষায় পুরো অঞ্চল জুড়ে দেখা যায় ব্যারিকেড, কাঁটাতার, ওয়াচ টাওয়ার, ও সেনা টহল। চেনা কর্মী ও পাকিস্তানের ভিআইপিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে মাঝেমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয় সড়ক। করাচি থেকে গদার এর অভ্যন্তরী বন্দরে সপ্তাহে মাত্র তিনবার বিমান যাতায়াত করে এমনকি বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটার সঙ্গে গদারের সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই।

 

তাই নিজেদের নাগরিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় এত ব্যয়সবহুল প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে চীন। কাজ সম্পুন্ন পরেও বিমান চলাচল শুরু না হওয়ার অন্যতম কারণ নিরাপত্তা ইসু। দশকের পর দশম ধরে বঞ্চিত বেলুচরা প্রতিশোধের নেশা উন্মুক্ত। বিমানবন্দরের চারপাশেই রয়েছে সুউচ্চ পাহাড় যা থেকে সরকার ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের উপর হামলা চালানো সম্ভব। তাই ভার্চুয়ালি বিমানবন্দরটি উদ্বোধনে বাধ্য হয় বাক চীনা সরকার প্রধান। এমন নিরাপত্তা সংখ্যার মধ্যে বিমান চলাচল কতটা ফলপ্রসু  হবে সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

পাকিস্তানের জমিতে চীনের সামরিক পরিকল্পনা