ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:২২:৫৬ এএম

পুঁজিবাজার সমস্যা পুরনো, সংকটে নতুন মাত্রা

১৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭:১০ পিএম

পুঁজিবাজার সমস্যা পুরনো, সংকটে নতুন মাত্রা

ছবি: সংগ্রহ

সরকার পতনের পর পুঁজিবাজারে চার কর্মদিবস উত্থান দেখে বিনিয়োগ করে নতুন করে বিপাকে পড়েছেন অনেক বিনিয়োগকারী। তাদের টাকা আটকে গেছে, প্রায় প্রতিদিনই কমছে এর আকার।

এরপর থেকে বাজারে একদিন সূচক বাড়লে তিন দিন কমে, অল্প সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারদরে ঊর্ধ্বগতির বিপরীতে অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে বহু কোম্পানির দর।


২০১০ সালের মহাধসের ক্ষত প্রায় দেড় দশক ধরে বয়ে বলা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখন তলানিতে। এ থেকে উত্তরণের পথ কী- এই প্রশ্নে বাজারের সঙ্গে জড়িতদের পরামর্শও সুনির্দিষ্ট নয়।

 


অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, যার অনেকগুলোই বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করেছে, যাকে দেখা হচ্ছে নতুন সংকট হিসেবে।

 

তার ভাষ্য, “বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয় এমন সিদ্ধান্ত নিলে বাজার তো পড়বেই। আগে বিনিয়োগকারীদের নিয়ে ভাবতে হবে। এটা না করে অন্য যাই করুক পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরবে না।”

 

আরেক বিনিয়োগকারী রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘নতুন কমিশনের এই কয় মাসে কয়েকটা কোম্পানির শেয়ারের দাম তো অনেক বেড়েছে, কারণ কিন্তু কেউ জানে না। এগুলা নিয়ে অনেক গুঞ্জন আছে।''

 

সংকট উত্তরণে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির ‘ছল-চাতুরি’ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেইন সিদ্দিকী।

স্টক ব্রোকারদের সমিতি ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, “সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান উদ্যোগ প্রয়োজন। স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করে পুঁজিবাজারের অনিয়মগুলো চিহ্নিত করা হোক।”

বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ে বহু বছর ধরে আলোচনা যে, এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অভাব, ব্যক্তিশ্রেণ

 

তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আরও অবনতি হয় পরিস্থিতির। ডলার সংকট, রিজার্ভ ক্ষয়, মূল্যস্ফীতির লাফ, কোম্পানির লোকসান, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন, সুদহার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকা, বিনিয়োগে মন্দা- সব মিলিয়ে এখন অর্থনীতির জন্যই কঠিন সময়, এই পরিস্থিতি পুঁজিবাজারের জন্য আরও চ্যালেঞ্জের।

 

এমন অবস্থার মধ্যে দুর্বল ও রুগ্ন কোম্পানিকে সবল দেখিয়ে তালিকাভুক্তি করে শত শত কোটি টাকা তোলার পর মুনাফায় থাকা কোম্পানিগুলো লোকসানিতে পরিণত হওয়ার কাহিনীও সামনে আসছে।

 

আবার নির্ধারিত মেয়াদকালের বিদ্যুৎ কোম্পানি প্রিমিয়াম দিয়ে বাজারে তালিকাভুক্তি করা হয়েছে। বুক বিল্ডিংয়ের নামে যে দরে কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত হয়েছে বাজারে লেনদেন শুরুর পর ওই দর ধরে রাখতে পারেনি শেয়ার।

আবার শক্তিশালী মৌলভিত্তির অনেক কোম্পানি যে মুনাফা দেখায়, তা তাদের ব্যবসার গতির সঙ্গে মানানসই নয়; কিন্তু এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কখনও গা করেনি।

 

২০১০ সালের মহাধসের পর পুঁজিবাজার ফের আলোচনায় আসে ২০২০ সালে। কোভিড মহামারীর শুরুতে শেয়ারদর যখন লাফিয়ে লাফিয়ে কমছিল, তখন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের একটি সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

 

২০২০ সালের ১৭ মে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। প্রায় তিন মাস বাজার বন্ধ থাকার পর চালু হতে শুরু হয় উত্থান। তবে সেই উত্থান সমানুপাতিক ছিল না। সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে কোনোটি দ্বিগুণ, কোনোটি চার গুণ, কোনোটি ১০ গুণ হয়ে যায় যা তাদের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির

পুঁজিবাজার সমস্যা পুরনো, সংকটে নতুন মাত্রা