ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:২৩:০৮ পিএম

পেট্রোবাংলা সামিটের দ্বিতীয় এলএনজি চুক্তি বাতিল করেছে

৮ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:১৯ এএম

পেট্রোবাংলা সামিটের দ্বিতীয় এলএনজি চুক্তি বাতিল করেছে

ছবি: সংগ্রহ

পেট্রোবাংলার সচিব রুচিরা ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ৩ অক্টোবর পাঠানো এক চিঠির সিদ্ধান্ত অনুসারে, টার্মিনাল ব্যবহার চুক্তির ২৭.১(এ) ধারা মোতাবেক টিইউএ বাতিল করেছে পেট্রোবাংলা।

 

এতে বিদ্যুৎ, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় সামিট গ্রুপের সঙ্গে করা এলএনজির দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তি বাতিল হয়ে গেল। টার্মিনাল নির্মাণ বাতিলের এ চিঠির অনুলিপি সামিট এলএনজি টার্মিনাল-২ কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে। চিঠির অনুলিপি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড  এবং জ্বালানি বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি ও পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।


বিশেষ আইনের আওতায় কক্সবাজারের মহেশখালীতে দৈনিক ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ সক্ষমতার টার্মিনালটি অনুমোদন দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এটি ছিল দেশের তৃতীয় ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের পরিকল্পনা।

 

 

৩ অক্টোবর জ্বালানি বিভাগ থেকে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে সামিটের ৬০০ এমএমসিএফডি সরবরাহ সক্ষমতার টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তি অবসায়নের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয়।

 

সামিটের এলএনজি টার্মিনালের বিষয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়, কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান চুক্তি অবসানের পর পিপিএ-২০০৬/পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে। অথবা পিপিএ আইন-২০১৫ অনুযায়ী সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোর আওতায় ক্রয় প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা যেতে পারে। এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটির কার্যক্রম দ্রুত সময়ে শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জ্বালানি বিভাগ পেট্রোবাংলাকে অনুরোধ জানায়।

 

সামিটের দ্বিতীয় ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তির বিষয়ে পরামর্শ প্রদানে একটি কমিটি গঠন করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। চার সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির প্রধান (আহ্বায়ক) করা হয় ক্রয় বিশেষজ্ঞ মো. ফারুক হোসেনকে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের একজন প্রতিনিধি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের একজন প্রতিনিধি ও আরপিজিসিএলের একজন প্রতিনিধিকে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়।

 

 

এ কমিটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল-২ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে স্বাক্ষরিত টিইউএ ও আইএর সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা ও বাস্তবায়নে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেবে। সম্প্রতি এ কমিটি সামিটের দ্বিতীয় টার্মিনাল চুক্তি নিয়ে জ্বালানি বিভাগে একটি সুপারিশ জমা দেয়।

 

সামিটের দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণসংক্রান্ত প্রস্তাবটি গত বছরের ১৪ জুন অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদনের পর সামিটের অনুকূলে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) ইস্যু করা হয়। পরে সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড (এসওএসসিএল) ও পেট্রোবাংলার মধ্যে টার্মিনালটি নির্মাণসংক্রান্ত চুক্তির শর্ত নির্ধারণে আলোচনা হয়। দুই পক্ষ খসড়া চুক্তির বিষয়ে একমত হওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি দেশের তৃতীয় ভাসমান এ এলএনজি টার্মিনালের অনুমোদন দেয়। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ টার্মিনাল নির্মাণ প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়া হয়। পেট্রোবাংলার সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি গ্যাস সরবরাহ ও টার্মিনাল চুক্তি বাস্তবায়ন হলে রিগ্যাসিফিকেশন চার্জ বাবদ ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি আয়ের সুযোগ ছিল।

 

দেশে বর্তমানে ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার দুটি এলএনজি ভাসমান টার্মিনাল রয়েছে। এর একটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে সামিট গ্রুপ। ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল পেট্রোবাংলার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল টার্মিনালটি রিগ্যাসিফিকেশন শুরু করে। ১৫ বছর মেয়াদি সামিটের রিগ্যাসিফিকেশন চুক্তি রয়েছে পেট্রোবাংলার সঙ্গে।

পেট্রোবাংলা সামিটের দ্বিতীয় এলএনজি চুক্তি বাতিল করেছে