ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৮:৪২ এএম
অনলাইন সংস্করণ
বন্ধ কোম্পানির শেয়ার কিনে সর্বস্বান্ত বিনিয়োগকারীরা
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৮:৪২ এএম
ছবি: সংগ্রহীত
দেশের পুঁজিবাজারে এমন কিছু কোম্পানি রয়েছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে, বার্ষিক সাধারণ সভাও (এজিএম) আয়োজন করেনি, এমনকি শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার কোনো উদ্যোগও নেয়নি। তবুও এসব কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন দেদারছে চলছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যাপক ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন
বেশ কয়েকটি বন্ধ কোম্পানি পুঁজিবাজারে নানা ধরনের ভুয়া তথ্য প্রচার করে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনায় প্রলুব্ধ করছে। উদাহরণস্বরূপ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের শেয়ার গত এক বছরে ৭ টাকা থেকে বেড়ে ৫৯ টাকা ৫০ পয়সায় উঠে গেছে—যা প্রায় ৭৫০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি। অথচ কোম্পানিটি বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে।
একইভাবে অ্যাপোলো ইস্পাত—যার সর্বশেষ এজিএম হয়েছে ২০১৮ সালে—সে কোম্পানির শেয়ারের লেনদেনও নিয়মিত চলছে। সম্প্রতি তিন লাখেরও বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটির। অথচ ২০১৩ সালে তালিকাভুক্তির সময় শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম নেওয়া হলেও কোম্পানিটির বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “বন্ধ কোম্পানির শেয়ার কেনা মানে জেনে-বুঝে বিষপান করা। বিনিয়োগকারীদের এই বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার।” তিনি আরও বলেন, “গুজব ছড়িয়ে কিছু মানুষ বন্ধ কোম্পানি নিয়ে জুয়া খেলছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, “বাজার সংস্কারে বর্তমান কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বন্ধ কোম্পানির বিষয়ে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন।”
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “কোনো কোম্পানি সংস্কারের জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখতে পারে। তবে ছয় মাসের বেশি বন্ধ থাকলে সেটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়। বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির কথা চিন্তা করে তালিকাচ্যুত করা হয় না।”
ডিএসইর পরিচালক রিচার্ড ডি’ রোজারিও বলেন, “সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে তালিকাচ্যুতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। তবে রুগ্ন কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সচেতনতা খুবই জরুরি। বন্ধ কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। তাই বিনিয়োগের আগে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিএসইসি ও ডিএসইর উচিত, বন্ধ কোম্পানির বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে বাজারে সুশাসন নিশ্চিত করা।