ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১:৪৭:২৮ পিএম

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:৩৫ পিএম

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল

ছবি: সংগ্রহ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি বলেন, "যখন আমরা দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মান ছিল প্রায় ১২০ টাকার কাছাকাছি, তবে এখন এটি ১২২ টাকার আশেপাশে রয়েছে এবং আমরা একটি স্থিতিশীল বিনিময় হার বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।"

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশি টাকা মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১.৬৭ শতাংশ অবমূল্যায়িত হয়েছে, যেখানে গত বছরের একই সময়ে এই হার ছিল ১.৪৯ শতাংশ। অপরদিকে, প্রতিবেশী দেশ ভারতীয় রুপি একই সময়ে ২.১৯ শতাংশ অবমূল্যায়িত হয়েছে।

 

 

গভর্নর ড. মনসুর আরও উল্লেখ করেন, “বর্তমানে বিনিময় হার বজায় রাখতে আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিক্রি করা হচ্ছে না। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে রিজার্ভ বিক্রি করে বিনিময় হারে প্রভাব ফেলা হয়েছিল, যার ফলে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এখন আমরা রিজার্ভকে ২০ বিলিয়নের কাছাকাছি স্থিতিশীল রেখেছি।”

 

 

প্রবাসী আয় বৃদ্ধির প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, “জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ২.১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা টানা ছয় মাস ধরে ২ বিলিয়নের বেশি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রবাহ কমে যাওয়ায় এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে।”

 

 

ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, “আগের সরকারের সময়ে অনেক প্রবাসী হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতেন, কিন্তু বর্তমান সরকারের অধীনে এই প্রবণতা বন্ধ হয়ে গেছে।”

 

 

 

এছাড়া, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে দেশ ১৩.৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের ১০.৮০ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বেশি। রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়ে ২২.৩২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা আগের বছর ছিল ২০.১৯ বিলিয়ন ডলার।

 

 

গভর্নর ড. মনসুর বলেন, “ছয় মাস আগে যখন সরকার গঠন করি, তখন অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিঘ্নিত ছিল, তবে এখন আমরা চলতি হিসাব ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি। আগের বড় ধরনের ঘাটতি থেকে এখন একটি টেকসই পরিস্থিতিতে আছি।”

 

 

এই স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল