ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:১০ এএম
অনলাইন সংস্করণ
বিদেশি ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশের অর্থনীতি: মেগা প্রকল্পের বোঝা
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:১০ এএম
![বিদেশি ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশের অর্থনীতি: মেগা প্রকল্পের বোঝা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/12/24/20241224091014_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহীত
বড় বড় মেগা প্রকল্পের নামে গৃহীত বিদেশি ঋণ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর দেখা যাচ্ছে, সেগুলো থেকে আর্থিক দায়ের তুলনায় সুফল অত্যন্ত নগণ্য। কর্ণফুলী টানেলের মতো প্রকল্প এখন সরকারের জন্য গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ প্রকল্প শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ঋণের সুদাসল পরিশোধের চাপ, অথচ এসব প্রকল্পের অর্থনৈতিক সুফল প্রশ্নবিদ্ধ।
আরও পড়ুন
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ২০টি মেগা প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব পরবর্তী সরকারের ওপর পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রণীত শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিদেশি ঋণের সুদাসল বাবদ যে পরিমাণ অর্থ পরিশোধ হচ্ছে, ২০২৮ সাল নাগাদ তা তিন গুণ বৃদ্ধি পাবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত ঋণের ৩৬.৬% রাশিয়াকে, ৩৫% জাপানকে এবং ২১% চীনকে পরিশোধ করতে হবে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৬২.৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণের দায় রয়েছে।
কিছু প্রকল্পের উদাহরণ:
-
কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প: ১১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটিতে চীন ৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। গ্রেস পিরিয়ড শেষে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে প্রকল্পটি উদ্বোধনের আগেই।
-
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিতব্য এই প্রকল্পও ভবিষ্যতে বিশাল অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
-
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প: ২.৬৬ বিলিয়ন ডলার ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, "কিছু প্রকল্পের বিপরীতে যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ নেওয়া হয়েছে। ফলে অর্থনীতিতে প্রত্যাশিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।" উদাহরণস্বরূপ, খুলনার খালিশপুরে ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্যাস সংকটের কারণে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারছে না।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের গবেষণায় বলা হয়েছে, ঋণদাতা সংস্থাগুলোরও দায়িত্ব ছিল সঠিকভাবে যাচাইবাছাই করা। কিন্তু এ অবহেলার কারণে এখন জনগণের করের টাকায় ঋণের বোঝা বহন করতে হচ্ছে।
বিদেশি ঋণ গ্রহণের আগে যথাযথ যাচাই ও সঠিক প্রকল্প নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত দেশগুলোর মতো বিদেশি ঋণের কৌশলগত ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।
মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে কার্যকর নীতিমালা প্রয়োজন।
![বিদেশি ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশের অর্থনীতি: মেগা প্রকল্পের বোঝা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)