ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১০ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:১৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
বিদেশী যে কোনো ক্যান্সারের ওষুধের তুলনায় বীকনের ওষুধের দাম ১০ ভাগের এক ভাগ
১০ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:১৩ এএম
![বিদেশী যে কোনো ক্যান্সারের ওষুধের তুলনায় বীকনের ওষুধের দাম ১০ ভাগের এক ভাগ](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/10/10/20241010091311_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহীত
বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধ প্রস্তুতকারক বৃহত্তম ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এবং সামগ্রিকভাবে দেশের দ্রুত বর্ধনশীল ফার্মাসিউটিক্যালস ব্যবসার মধ্যে একটি। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালসের সদর দপ্তর বর্তমানে দেশের রাজধানী ঢাকায়। একটি বৈশ্বিক ওষুধ প্রস্তুতকারক ফার্ম হওয়াই বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের লক্ষ্য। বিশ্বের স্বাস্থ্য চাহিদা পূরণে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বীকন ক্যান্সার এবং অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগ মোকাবেলায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ আবিষ্কার ও সরবরাহ করছে। বীকন বাংলাদেশের প্রথম ওষুধ কোম্পানি, যা ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করে।
ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞদের দ্বারা বিকশিত, বীকন ওষুধ শিল্পের সেরা অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি প্রতিষ্ঠান। ইউএস-এফডিএ, ইউকে-এমএইচআরএ, টিজিএ-অস্ট্রেলিয়া ও ডব্লিউএইচও-সিজিএমপির মতো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সর্বাধুনিক সুবিধা এবং সর্বাধিক আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস ৩০০টিরও বেশি জেনেরিক ওষুধ এবং ৭০টি ক্যান্সারের ওষুধ উৎপাদন করছে। বীকন প্রতি বছর ১৫টিরও বেশি নতুন উচ্চ প্রযুক্তির আইটেম প্রবর্তন করে। উপরন্তু বীকনের ‘গবেষণা ও উন্নয়ন দল’ বেশকিছু নতুন জেনেরিক ওষুধ উদ্ভাবন করেছে, যা বীকন ফার্মাকে বৈশ্বিক ওষুধ শিল্পে উজ্জ্বল করেছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে বীকন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
বীকনের উৎপাদিত ওষুধ বিশ্ববাজারে রফতানিতে বেশ প্রচলিত ও বিস্তৃত। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর বীকন এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ফার্মাসিউটিক্যালস রফতানি করছে। আবার কিছু দেশের রোগীদের কাছে ওষুধ পাঠানোর জন্য ‘গ্লোবাল পেশেন্ট কেয়ার সার্ভিসেস’ নামে পৃথক বিভাগ আছে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে রোগীরা ওষুধের চাহিদা পাঠান। বীকন কুরিয়ার সার্ভিসে ওষুধ পাঠিয়ে দেয়। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ক্যান্সারের ওষুধের মান ভালো ও সাশ্রয়ী। ১৩৫টি দেশের রোগীরা এ ওষুধ ব্যবহার করছেন।
দেশে নিবন্ধিত ওষুধ কোম্পানি ২৫৭টি। এর মধ্যে চালু আছে ১৯০টির মতো। বীকন তার একটি। বীকনের যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে। বর্তমানে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এবাদুল করিম। ২০০৭ সালে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ক্যান্সার প্লান্ট প্রতিষ্ঠা করে। তারা ক্যান্সারের ওষুধ প্রথমে বাজারে আনে ২০০৯ সালে। ২০১০ সালে তা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। এরপর ২০২০ সালে বীকন ফার্মা ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে অ্যান্টিবায়োটিক প্লান্ট নির্মাণ করে । প্রতিষ্ঠানটির পাঁচটি ডেডিকেটেড প্রডাকশন ফ্যাসিলিটি আছে। যেখানে ৪০০টিরও বেশি পণ্য উৎপাদিত হয়। বীকন ফার্মায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে বর্তমানে মোট দুই হাজার কর্মচারী কর্মরত আছেন। এটি দেশের এক নম্বর অনকোলজি কোম্পানি। অত্যাধুনিক উৎপাদন কেন্দ্রটি ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত। প্রায় ৩০ একর জায়গাজুড়ে কারখানাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সব বিভাগেই বীকনের ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্ট রয়েছে।
ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করে পুরনো অনেক কোম্পানিকে পেছনে ফেলে বীকন সামনে চলে এসেছে। ক্যান্সারের ওষুধে তারা এখন দেশের সেরা। তাদের অবস্থান আরো শক্ত হচ্ছে। কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি ক্যান্সারের ওষুধের বাজার দখল করে ছিল। এখন তাদের ব্যবসা সংকুচিত হয়েছে। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার চিত্রে বীকন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পেরেছে।
বাংলাদেশের ওষুধের বাজারে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালসের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের শ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন বেড়েছে। পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসা ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিও এক্সপ্লোর করছে। ফলে বাংলাদেশে ওষুধ বাজারে বিদেশী পণ্যের প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যের পরিবর্তন ঘটেছে এবং এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে অবদান রেখেছে। এসব পরিবর্তনে সরকারের সক্রিয় ভূমিকা ও সর্বজনীন সচেতনতার মাধ্যমে চিকিৎসার মান উন্নতি সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধ উৎপাদনে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস একটি প্রধান সাশ্রয়ী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তাদের নীতিমালা সর্বপ্রথম রোগীদের হিতের দিকে যাচাই করে তৈরি করা হয়েছে, যাতে রোগীদের জন্য ক্যান্সারের ওষুধ নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা যায়। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস সব ধরনের ক্যান্সারের প্রতিটি স্টেজের ওষুধ দেশেই উৎপাদন করছে। বাংলাদেশে তাদের উৎপাদিত ওষুধের ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বাড়ছে এবং বিবিসিসহ অন্যান্য বিশ্ব মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।
ক্যান্সার ওষুধ উৎপাদিত হওয়ায় তা দেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসার হার বাড়লে তা জিডিপিতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। মানুষের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পেতে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম পরিচালনা করে আসছে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস। এটি ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধের বাজারকে বিস্তৃত করেছে। তবে এর সঙ্গে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্পর্কে চিন্তা করা জরুরি। কারণ অর্থনৈতিক হারে ক্যান্সার চিকিৎসার বাজার বৃদ্ধি পায়।
বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস ওষুধের গুণগত মান ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর এবং দেশে অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন করছে।
আমাদের দেশের যে মাথাপিছু আয় সে হিসেবে দেশে ক্যান্সার ওষুধের দাম এখনো অনেক ব্যয়বহুল। কিন্তু বীকন ফার্মা বিভিন্নভাবে সেটা কমানোর চেষ্টা করে আসছে। যে কারণে ওষুধ উৎপাদনের শুরুতেই তারা সে ওষুধের বাজারমূল্য বিদেশী যেকোনো ওষুধের দশ ভাগের এক ভাগ নির্ধারণ করে থাকে।। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনের মধ্য দিয়ে সব ওষুধই রোগীর নাগালের মধ্যে আনার চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে রোগীরা কোনো না কোনোভাবে কিছুটা সুবিধা পান। একই সঙ্গে আমাদের স্টোরেজ থেকে সরাসরি রোগীদের ওষুধ দেয়ার ব্যবস্থা থাকায় মধ্যস্থতাকারীদের কোনো রকম অর্থ রোগী বা তার পরিবারকে দিতে হয় না। এছাড়া বিভিন্ন রকমের প্রমোশনাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্যান্সার চিকিৎসায় কিছু শতাংশ ছাড় দেয়ারও চেষ্টা করে প্রতিষ্ঠানটি।
বীকন নৈতিক ব্যবসায়িক অনুশীলন এবং স্বচ্ছতার ওপর জোর দেয়। কোম্পানির লক্ষ্য মানবজাতির জীবনযাত্রার মান উন্নত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা। বীকন প্রগতিশীল শ্রম নীতি সমর্থন করে এবং জোরপূর্বক ও শিশু শ্রম নিষিদ্ধকারী শ্রম আইন মেনে চলে।
দেশে প্রচলিত মাদকাসক্তি সমস্যা সমাধানের জন্য কোম্পানিটি বীকন পয়েন্ট প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষিত পেশাদাররা এখানে যারা ভর্তি হয় তাদের চিকিৎসা করান। বীকন কারখানা নির্মাণের সময় পরিবেশগত দিকগুলোর কথাও মাথায় রাখে। তারা একটি দাতব্য বিদ্যালয়ও পরিচালনা করছে।
![বিদেশী যে কোনো ক্যান্সারের ওষুধের তুলনায় বীকনের ওষুধের দাম ১০ ভাগের এক ভাগ](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)