ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৪:২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বেগমগঞ্জে নতুন গ্যাসের সন্ধান, মজুদ ১৮০ বিসিএফ
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৪:২ পিএম
![বেগমগঞ্জে নতুন গ্যাসের সন্ধান, মজুদ ১৮০ বিসিএফ](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/09/23/20240923160220_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহীত
বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) কূপে ৩টি স্তরে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদ প্রায় ১৮০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। দৈনিক ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন করলে প্রায় ২০-২৫ বছর গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার।
মূল্যায়ন ও উন্নয়ন কূপটির খনন কাজ শুরু করা হয় ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল। ৩১১৩ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করে ৩টি স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। প্রথম স্তরের পুরুত্ব ৫২ মিটার (১৯২১-১৯৭৩ মিটার), দ্বিতীয় স্তরের পুরুত্ব ৩৭ মিটার (২৫৪৮-২৫৮৫ মিটার), তৃতীয় স্তর ২০ মিটার (৩০৮১-৩১০১ মিটার) গ্যাসের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ডিএসটি (ড্রিল স্টেম টেস্ট) শেষে ১০ থেকে ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে।
দেশীয় ও আমদানিকৃত গ্যাসের মিশ্রিত দর ২২.৮৭ টাকা (ঘনমিটার) বিবেচনা করলে ১৮০ বিসিএফ গ্যাসের মূল্য প্রায় ১১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। আমদানিকৃত এলএনজির মূল্য ১১.৫ ইউএস ডলার (এমএমবিটিইউ) হিসেবে ১৮০ বিসিএফ গ্যাসের মূল্য প্রায় ৭ লাখ ৩ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা (ডলার ১২০ টাকা) দাড়াবে।
বেগমগঞ্জের ৪ নম্বর কূপ খননের প্রকল্প ব্যয় আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা। বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) কূপ হতে প্রাপ্ত গ্যাস আঞ্চলিক সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করতে হলে আনুমানিক ৩ কিলোমিটার গ্যাস গ্যাদারিং পাইপ লাইন স্থাপন করতে হবে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ স্থাপন সমাপ্ত হবে মর্মে আশা করা যাচ্ছে। প্রাপ্ত ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে সরবরাহ করা হলে উক্ত এলাকার গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে জিটিসিএল এর পাইপ লাইনের মাধ্যমে ইতোপূর্বে সরবরাহকৃত গ্যাস ঢাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে পেট্রোবাংলা।
দেশে গ্যাস সংকটের জন্য অনুসন্ধান স্থবিরতাকেই দায়ী করে আসছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। কয়েক দশকের ঢিলেমির কারণে সমালোচনায় মুখর ছিলেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তবে সেইদিন এখন বদলে যেতে শুরু করেছে। পেট্রোবাংলার খোলনচে বদলে গেছে বর্তমান চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকারের সময়ে। একদিকে যেমন গতিময় হয়েছে, অন্যদিকে নতুন মাত্রাও যুক্ত হয়েছে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে। কখনও লোকবল সংকট, কখনও আবার পরিকল্পনার অভাবে বাপেক্সের রিগগুলো বেকার পড়ে থাকতো। কিন্তু কয়েক মাস ধরে ৫টি রিগেই ব্যস্ত সময় পার করছে। একটি কাজ শেষ না করতেই আরেকটি কাজের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি আরও একটি রিগ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে ১১২ বছরে অনুসন্ধান কূপ খননকরা হয়েছে কমবেশি ৯৯টি। আর আগামী ৩ বছরে ৬৯টি কূপ খননের পরিকল্পনা নিয়েছে পেট্রোবাংলা। একে অনেকে উচ্চাভিলাষী মনে করলেও খুবই জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, ১০টি কূপ খনন করে ১টিতে গ্যাস পাওয়া গেলে অর্থনৈতিকভাবে সফল মনে করা হয়। সেখানে বাংলাদেশে ৩টি অনুসন্ধান কূপ খনন করলে একটি গ্যাস পাওয়া যায়। তারপরও বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যেভাবে কাজ হয় নি। যে কারণে আজকের এই সংকট বলে মনে করা হয়।
বাংলাদেশ এক সময় দেশীয় গ্যাসফিল্ডগুলো থেকে ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করতো। ফিল্ডগুলোর মজুদ কমে আসা ও নানা সীমাবদ্ধতার কারনে এখন ২০০০ মিলিয়নে নেমে এসেছে। ঘাটতি সামাল দিতে ২০১৮ সালে এলএনজি আমদানি শুরু করা হয়। এজন্য মহেশখালীতে ২টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়। তবে সাগর উত্তাল হলেই সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
![বেগমগঞ্জে নতুন গ্যাসের সন্ধান, মজুদ ১৮০ বিসিএফ](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)