ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১:০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও ছাড় কমেছে
৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১:০ পিএম
![বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও ছাড় কমেছে](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/05/20250105121810_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমে গেছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে বিদেশি ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে মাত্র ৫২ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া ৫৮৫ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার থেকে প্রায় ৯১ শতাংশ কম।
এই পাঁচ মাসে অনুদানের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৭ কোটি ৩৮ লাখ মার্কিন ডলার এবং ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৪ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই দুটি খাতে যথাক্রমে ২৮ কোটি ৬৩ লাখ মার্কিন ডলার এবং ৫৫৭ কোটি ২৭ লাখ মার্কিন ডলার প্রতিশ্রুত হয়েছিল।
তবে, বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড়ও কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১৫৪ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ ছাড় হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থ ছাড়ে এই কমতি ছিল প্রায় ২৭ শতাংশ।
তবে, ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর মাসে যেখানে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল এক হাজার ৪৬৪ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার, সেখানে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৪২ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার। এই সময়ে ঋণ পরিশোধের খাতে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ২৫৯ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার এবং সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৭৮২ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
ইআরডি (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জুলাই ও আগস্ট মাসে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে ঋণ ছাড় কমে গেছে। অনেক বিদেশি তহবিলপ্রাপ্ত প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে, কারণ বিদেশি পরামর্শক এবং কর্মীরা প্রকল্পের কাজে অংশ নিতে আসেননি। সরকার বর্তমানে ঋণ প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছে এবং নতুন ঋণ চুক্তির জন্য কিছু প্রকল্প সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। পর্যালোচনা শেষে সরকার ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং লক্ষ্য পূরণের জন্য চেষ্টা করবে।
এদিকে, বর্তমান সরকার বৈদেশিক ঋণ এবং অর্থায়নে প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইআরডি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে বৈদেশিক ঋণ বরাদ্দের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলির তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহ উন্নয়ন অংশীদাররা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করতে আগ্রহী রয়েছে। ফলে, সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর জন্য বৈদেশিক ঋণ সংগ্রহের চেষ্টা করা হবে।
এই পরিস্থিতিতে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঋণ সহায়তা এবং অর্থ ছাড় কমে যাওয়ার পাশাপাশি, ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
- ট্যাগ সমূহঃ
- বৈদেশিক
- ঋণের
- প্রতিশ্রুতি
![বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও ছাড় কমেছে](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)