ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৪:৪৬:৫০ পিএম

ভারত রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশে দাম কমেনি পেঁয়াজের

৭ মে, ২০২৪ | ৯:৫ এএম

ভারত রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশে দাম কমেনি পেঁয়াজের

প্রায় পাঁচ মাস পর গত শনিবার পেঁয়াজ রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। তবে ভারতের এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেনি। এর মধ্যে গতকাল পাইকারিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা।


দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫৮-৬৫ টাকায়। পরের দিন ভারত রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে দাম কিছুটা কমে যায়। রোববার পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫৫-৬২ টাকায়। তবে গতকাল আবার দাম কেজিতে বেড়ে যায় ৩-৪ টাকা।

 

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত রফতানি উন্মুক্ত করলেও ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দেয়ায় দেশে পেঁয়াজের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। ভারতের বেঁধে দেয়া দামে আমদানি করতে গেলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়বে ৭০-৭৫ টাকা।

 

খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, ভারতের পেঁয়াজ রফতানির খবরে পাইকারিতে দাম কিছুটা কমলেও মোকামে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেনি। রোববারও ফরিদপুর, পাবনা, রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় মোকামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায়।

 

খাতুনগঞ্জের মো. জসিম উদ্দিন  বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব পেঁয়াজ রয়েছে, সেগুলোর মান অনেক ভালো। বর্তমানে বড় আকৃতির পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। ভারত যে দাম নির্ধারণ করেছে, সে দামে দেশে পেঁয়াজ আমদানি হলে হয় ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বেন, নয়তো দেশীয় পেঁয়াজের বাজার বেড়ে আমদানি করা পেঁয়াজের সমান হতে হবে। দীর্ঘ পাঁচ মাস ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি না হলেও দেশীয় পেঁয়াজ দিয়ে আমরা চাহিদা মিটিয়েছি। ফলে ভারতের রফতানি বাজার খুলে দেয়ার সঙ্গে বর্তমানে দেশের বাজার তেমন একটা নির্ভর করছে না।’

 

বিশ্বের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজ রফতানিকারক দেশ ভারত। রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এ পণ্য রফতানি গত ৮ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রেখেছিল ভারত। ৩১ মার্চ পর্যন্ত থাকা ওই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রফতানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে আগামী ৭ মে মহারাষ্ট্রের লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে রফতানি উন্মুক্ত করা হয়। এর আগে রফতানিতে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজের অব্যাহত দরপতনে কৃষক পর্যায়ে ক্ষোভ বাড়ছিল। বন্যাসহ বিরূপ আবহাওয়ায় বিগত মৌসুমে উৎপাদন সংকটে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বেড়ে যাওয়া প্রতিরোধে ভারত পেঁয়াজের রফতানি বন্ধ রেখেছিল।

 

খাতুনগঞ্জের মেসার্স ইরা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘একসময় ভারতের পেঁয়াজ সরবরাহ বন্ধ থাকলে দেশে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি কয়েকশ টাকা পর্যন্ত উঠতে দেখা গেছে। সেদিন আর নেই। ভালো দাম পাওয়ায় দেশের কৃষকরা ভালো মানের পেঁয়াজ উৎপাদন করছেন। যার কারণে প্রায় পাঁচ মাস ভারতীয় পেঁয়াজ সরবরাহ না থাকলেও দেশে অস্থিরতা হয়নি।’

 

তিনি বলেন, ‘মজুদ ও সংরক্ষণ পর্যায়ে বাংলাদেশ এখনো উন্নত না হওয়ায় প্রতি বছর কয়েক লাখ টনের ঘাটতি তৈরি হয়। উৎপাদন প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে।’

 

ভারত রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশে দাম কমেনি পেঁয়াজের