ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ
ভেঙে পড়েছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৬ এএম
![ভেঙে পড়েছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/12/29/20241229090545_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহীত
মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজে সাত শ্রমিক হত্যার বিচার, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে চলমান নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট অবশেষে স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুরোধে এ কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এ ঘটনায় চার দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে দেশব্যাপী কর্মবিরতি শুরু করে। এতে দেশের সব নৌপথে লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
নৌযান শ্রমিকদের এ ধর্মঘটের ফলে সারা দেশের নৌপথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বিদেশি মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে কোনো পণ্য পরিবহন হয়নি। এর ফলে দেশের পণ্য সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়ে এবং ব্যবসায়ী মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
শত শত লাইটারেজ জাহাজ বিভিন্ন বন্দরে নোঙর করে ছিল। এদিকে, বহির্নোঙরে অন্তত ২০টি বিদেশি মাদার ভেসেল পণ্য খালাসের অপেক্ষায় ছিল। বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৪৫টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য আটকা পড়ে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এ ধরনের ধর্মঘটের কারণে দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। মাদার ভেসেলগুলোর প্রতিদিনের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া শিল্পের কাঁচামাল ও খাদ্যপণ্যের ডেমারেজ চার্জও আমদানিকারকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।
শ্রমিকদের দাবি পূরণের লক্ষ্যে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে নৌপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং নিহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান জানান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুরোধে এবং আলোচনার ভিত্তিতে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। তবে নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা আবারও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়ন এবং পণ্য পরিবহন কার্যক্রমের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ধর্মঘটের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
![ভেঙে পড়েছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)