ঢাকা শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:২৬:০৬ পিএম

ভোলায় গ্যাসের মজুত কম: বক্তব্য জ্বালানি উপদেষ্টা

"ভোলাতে যে ৫ টিসিএফ গ্যাসের কথা বলা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল। এটা রিসোর্স হতে পারে। মজুত নয়। আপনি ড্রিলিং করে না পেলে মজুত বলতে পারবেন না।"

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৩:৪৩ পিএম

ভোলায় গ্যাসের মজুত কম:  বক্তব্য জ্বালানি উপদেষ্টা

ছবি: সংগ্রহ

ভোলায় গ্যাসের মজুত ৫ দশমিক ১ নয় বরং ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে আজ (বৃহস্পতিবার) সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

 


তিনি বলেন, "ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এই তথ্যটা যদি সঠিক হতো, তাহলে আজ আমরা উৎসব করতাম।

 

এসময় উপদেষ্টা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাকে ভোলায় গ্যাসের মজুতের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরার অনুরোধ জানান। বাপেক্স কর্মকর্তা জানান, ভোলার চরফ্যাশনে আমাদের কোনো সিসমিক সার্ভের ডাটা নেই। শাহবাজপুর, ভোলা এবং ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে ২ দশমিক ০৪৭ টিসিএফ  প্রমাণিত গ্যাস রিজার্ভ রয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, ভোলা এলাকায় বাপেক্স ও গ্যাজপ্রম যৌথভাবে প্রণীত সিসমিক ডাটা বিশ্লেষণ রিপোর্ট অনুযায়ী ভোলা জেলার দক্ষিণাংশে চরফ্যাশন এলাকায় ১০ শতাংশ সম্ভাব্যতা হিসেবে ২ দশমিক ৬৮৬ টিসিএফ এবং শাহবাজপুর, ভোলা ও ইলিশা গ্যাসক্ষেত্র এলাকার নতুন জোনে ও গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যবর্তী স্থানে ১০ শতাংশ সম্ভাব্যতা হিসেবে ২ দশমিক ৪২৩ টিসিএফ অর্থাৎ মোট ৫ দশমিক ১০৯ টিসিএফ গ্যাস ।

 

 

একই রিপোর্টে চরফ্যাশন এলাকায় ৯০ শতাংশ সম্ভাব্যতা হিসেবে ১ দশমিক ১৩৪ টিসিএফ এবং তিনটি গ্যাসক্ষেত্র ও নিকটবর্তী এলাকায় ৯০ শতাংশ সম্ভাব্যতা হিসেবে ০ দশমিক ৬৭৫ টিসিএফ মোট ১ দশমিক ৮০৯ টিসিএফ গ্যাস হয়েছে বলেও জানান এই বাপেক্স কর্মকর্তা।

 

বৈঠকে উপস্থিত জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, "গ্যাসের মজুত নির্ণয়ের জন্য প্রথমে সিসমিক সার্ভে করা হয়। তারপর সার্ভের তথ্য উপাত্ত দেখে কোম্পানিগুলো ঠিক করে সবচেয়ে বেশি কোথায় সম্ভাবনা রয়েছে গ্যাসের।

 

তিনি আরও বলেন, "প্রমাণিত কিংবা প্রবাবল না হলে আমরা কোনো গ্যাসের মজুত হিসাবে আনি না। মজুতের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেটা মিস লিডিং। ভোলায় মোট গ্যাসের মজুত ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।"

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, "ভোলাতে যে ৫ টিসিএফ গ্যাসের কথা বলা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল। এটা রিসোর্স হতে পারে। মজুত নয়। আপনি ড্রিলিং করে না পেলে মজুত বলতে পারবেন না।"

 

পরে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, "যেই জায়গাটার কথা বলা হচ্ছে সেখানে আমরা সিসমিক সার্ভে ও ড্রিলিং শুরু করবো। গতকাল একনেকে চারটি কূপ খননের জন্য প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।  গ্যাসের কারণে আমাদের শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যেখানে গ্যাসের সম্ভাবনা আছে, এটাকে আমরা বের করতে চাই। সেটাকে আমরা জাতির কল্যাণে ব্যবহার করতে চাই।"

 

ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, "আমরা আরও ১০০টি কূপ খনন করার উদ্যোগ নিয়েছি। যেটাকে এখন অমূলক বলছি, সেটা একসময় বাস্তব হয়ে উঠবে।"

ভোলায় গ্যাসের মজুত কম:  বক্তব্য জ্বালানি উপদেষ্টা