ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:৪৪:২০ এএম

মার্কিন প্রতিনিধি পোশাকশিল্প নিয়ে তদন্তে ঢাকায়

৩০ এপ্রিল, ২০২৪ | ৪:২৭ পিএম

মার্কিন প্রতিনিধি পোশাকশিল্প নিয়ে তদন্তে ঢাকায়

বাংলাদেশের পোশাকশিল্প নিয়ে তদন্তে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে গত মার্চে ওয়াশিংটনে একটি শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার সরেজমিন পরিস্থিতি দেখতে এসেছে দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের (ইউএসআইটিসি) প্রতিনিধি দল। দলটি খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি, শ্রম অধিকার, শিল্প মালিকদের আয়, কারখানা স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় শ্রমিকের ওপর প্রভাবসহ সার্বিক বিষয়।

 

গত ডিসেম্বরে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) অনুরোধে বাংলাদেশ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইউএসআইটিসি। শুধু বাংলাদেশ নয়; তাদের তদন্তের আওতায় পড়েছে কম্বোডিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান। এ তদন্তে দেখা হবে, কীভাবে এ দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারের বিশাল অংশ দখল করে রেখেছে। এই পাঁচটি দেশের কেউ অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজার দখল করছে কিনা, তা

 

তদন্তের অংশ হিসেবে সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ইউএসআইটিসির আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ এরিকা ব্যাথম্যান এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষক ম্যারি রুপ। গত শুক্রবার তারা ঢাকায় পৌঁছালেও কার্যক্রম শুরু করেছেন রোববার থেকে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত তারা বাণিজ্য, শ্রম, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সঙ্গে বৈঠক করা ছাড়াও একটি কারখানা পরিদর্শনে যাবে প্রতিনিধি দলটি। তারা আগামী ৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 

প্রতিনিধি দলটি কী তদন্ত করছে– জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘দেখুন, শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য বিষয় প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। শ্রমিককে কম মজুরি দেওয়া হলে তাদের বলার সুযোগ রয়েছে যে, এটি প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যক্রম। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বক্তব্য হলো, এখানকার বাস্তবতা ও আর্থসামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হয়।’

 

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন এ তদন্তের কী প্রভাব পড়তে পারে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথাও কোনো দুর্বলতা থাকলে তার জন্য সুপারিশ আসতে পারে। আর এ ধরনের গঠনমূলক সুপারিশ এলে বাংলাদেশ তা আমলে নেবে। এ ছাড়া নিজ দেশের ক্রেতাদের জন্য কোনো গাইডলাইন দিতে পারে ইউএসআইটিসি। তবে তারা মাত্র তদন্ত শুরু করেছে। আগামী ৩০ আগস্ট কমিশন তাদের তদন্ত প্রতিবেদন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করবে। কী ফল আসবে, তা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

 

তদন্তে শ্রম পরিবেশের সার্বিক বিষয় দেখবে কমিশন। সেখানে নিয়ম মেনে ভবন করা হয়েছে কিনা, শ্রমিকের কর্মপরিবেশ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, শ্রমিকের সঙ্গে আচরণ থেকে সবকিছু দেখা হবে। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর শ্রমিক আন্দোলনের সময়ে কর্মীরা নিহত হওয়ার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটি।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুর রউফ বলেন, প্রতিনিধি দলটি মূলত বাংলাদেশ, ভারতসহ আশপাশের দেশগুলোর টেক্সটাইল খাতের প্রতিযোগিতার শক্তি বিশ্লেষণ করে দেখবে। এটি তাদের দেশকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিগত সহযোগিতা করবে। পরে প্রতিবেদনটি তারা বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে দেবে, যাতে দেশগুলো এর থেকে উপকৃত হতে পারে।

 

ইউএসআইটিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, মার্কিন বাজারে শীর্ষ রপ্তানিকারক কয়েকটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে ঢাকায় এসেছে তাদের প্রতিনিধি দল। দলটি বাংলাদেশে পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা শক্তির পেছনের কারণ অনুসন্ধানে পরিসংখ্যান ও গুণগত তথ্য সংগ্রহ করবে।

মার্কিন প্রতিনিধি পোশাকশিল্প নিয়ে তদন্তে ঢাকায়