ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১২:৫৭:২৮ পিএম

মার্চে চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে তেল আসবে ঢাকায়, সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ২:৪০ পিএম

মার্চে চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে তেল আসবে ঢাকায়, সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা

ছবি: সংগ্রহ

বাংলাদেশের জ্বালানি পরিবহন খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে চলেছে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য নির্মিত ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন। নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৪ সালের মার্চ থেকে এর মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্মকর্তারা।


জ্বালানি তেল পরিবহনে দেশের ইতিহাসে এটি হবে একটি বড় মাইলফলক। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন পরিবহন খরচ কমবে, তেমনি তেলের সরবরাহব্যবস্থাও হবে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন।


বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের ডিপোগুলোতে এবং সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয়। তবে এ পদ্ধতিতে পরিবহন খরচ যেমন বেশি, তেমনি রয়েছে তেল চুরি ও পরিবহন বিঘ্নের ঝুঁকি। শুষ্ক মৌসুমে নৌপথের নাব্যতা কমে যাওয়ায় তেল পরিবহনও অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।


২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। ২০২০ সালে কাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তী সময়ে তা দুই দফায় বাড়ানো হয়।

 

শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২,৮৬১ কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩,৬৯৯ কোটি টাকায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।


পাইপলাইন চালু হলে প্রতি বছর পরিবহন খাতে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বর্তমানে নদী ও সড়কপথে তেল পরিবহনে বছরে খরচ হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা। পাইপলাইন ব্যবহারে বছরে ৩২৬ কোটি টাকা আয় হবে, আর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হবে ৯০ কোটি টাকা।


বিপিসি মনোনীত প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে। জানুয়ারিতে কমিশনিং শুরু হবে এবং মার্চে পুরোপুরি কার্যক্রম চালু হবে। কমিশনিংয়ের পাশাপাশি জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণও সম্পন্ন করা হবে।


পাইপলাইন ব্যবহারে পরিবহন খরচ কমার পাশাপাশি পরিবেশদূষণও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। দীর্ঘমেয়াদে প্রকল্পটি পরিবহন খাতে একটি টেকসই সমাধান হিসেবে কাজ করবে।


এই প্রকল্পের মাধ্যমে জ্বালানি পরিবহন খাতে বাংলাদেশ একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় দেশের জ্বালানি খাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

মার্চে চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে তেল আসবে ঢাকায়, সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা