ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩১ এএম
অনলাইন সংস্করণ
মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট জটিলতায় ২৬ হাজার বাংলাদেশি
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩১ এএম

ছবি: সংগ্রহ
মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রায় ২৬ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর প্রবাস জীবন অনিশ্চয়তায় পড়েছে, কারণ সময়মতো পাসপোর্ট নবায়ন না হওয়ায় তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। মূলত বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাসপোর্ট বিভাগে গাফিলতি এবং অসাধু দালালচক্রের দৌরাত্ম্যের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসীরা জানান, পাসপোর্ট নবায়নের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবেদনের পর ছয় মাস বা তারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অনেকে এখনো তাদের পাসপোর্ট পাননি। এই বিলম্ব কর্মসংস্থান ভিসা নবায়নে বাধা তৈরি করছে, ফলে প্রবাসীদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কিছু কর্মকর্তা এবং দালালদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা ই-পাসপোর্ট নেওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রবাসীদের হয়রানি করছে। আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য দালালরা ৩০০ থেকে ৫০০ রিংগিত পর্যন্ত আদায় করছে, যদিও আউটসোর্সিং কোম্পানি ইএসকেএল মাত্র ৩২ রিংগিতে পাসপোর্ট সেবা দিচ্ছে।
বাংলাদেশের আইন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, ১৫ ডিসেম্বর থেকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) প্রদান শুরু হবে এবং তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সব প্রবাসী তাদের আবেদনকৃত পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
তিনি আরও বলেন, সমস্যা পূর্ববর্তী সরকারের অনিয়মের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। পাসপোর্ট ছাপানোর কাজে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে একটি কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তীতে বাতিল করা হয়। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট চালুর মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে।
হাইকমিশনের কর্মীদের বিরুদ্ধে জাল নথি অনুমোদন, অসম্পূর্ণ আবেদন গ্রহণ এবং প্রবাসীদের হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনসহ অসদাচরণের অভিযোগও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হাইকমিশনকে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রবাসীদের জন্য সেবার মান উন্নত করা প্রয়োজন।
প্রবাসীরা এ বিষয়ে দ্রুত সমাধান আশা করছেন। তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাছে হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এবং হাইকমিশনের গাফিলতি দূর করার দাবি জানিয়েছেন।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল আশ্বাস দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে পাসপোর্ট জটিলতার পুনরাবৃত্তি হবে না এবং প্রয়োজন হলে বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ থেকে টিম পাঠানো হবে।
প্রবাসীদের দাবি, তাদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখে। তাই তাদের সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ভূমিকা পালন করা জরুরি।
