ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১২:৪৯:৫৯ পিএম

মূল্যস্ফীতির চাপে সঞ্চয় ভাঙছে শিক্ষার্থীরাও

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ২:৩৯ পিএম

মূল্যস্ফীতির চাপে সঞ্চয় ভাঙছে শিক্ষার্থীরাও

ছবি: সংগ্রহীত

গত তিন বছর ধরে দেশে গড় মজুরির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি থাকার প্রভাব পড়েছে স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে। প্রতি মাসে বাড়তে থাকা শিক্ষা ব্যয় এবং আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরের শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে পতন ঘটছে।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে স্কুল শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ ছিল ২,০৮৭ কোটি টাকা, যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ২,১৩৫ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা কমেছে।

 

২০২৩ সালের মে মাসে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় ছিল ২,২২৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত চার মাসে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ২৩৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুলাইয়ে সঞ্চয় ছিল ২,২০০ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে দাঁড়ায় ২,১৭২ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ২,১৩৫ কোটি টাকায় নেমে আসে।

 

 

অক্টোবর মাসে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ৪৩,৬৪,২৫৯, যা সেপ্টেম্বর মাসে ছিল ৪৩,০৫,০৬০। এক মাসে হিসাব বেড়েছে ৫৯,১৯৯টি। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২,৩৮,১৩২ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১,২৬,১২৭।

 

 

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, শিক্ষার্থীরা তাদের সঞ্চয় থেকে অর্থ উত্তোলন করছে দৈনন্দিন খরচ মেটাতে। অর্থনৈতিক চাপের কারণে অনেক পরিবার সন্তানদের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা তুলতে বাধ্য হচ্ছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি, শিক্ষা খরচ এবং অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধির কারণেও সঞ্চয় কমছে।

 

 

২০১০ সালে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা মাত্র ১০০ টাকা জমা রেখে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। বর্তমানে ৫৯টি ব্যাংক এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অ্যাকাউন্টধারীরা নানা সুবিধা পেয়ে থাকে, যেমন বিনা চার্জে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড, এবং রেয়াতমূল্যে পরিষেবা।

 

প্রথম বছর ২০১১ সালে ২৯,০৮০টি অ্যাকাউন্ট খোলা হলেও বর্তমানে এই সংখ্যা লক্ষাধিক। তবে করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে নিম্নগতি দেখা গেছে।

 

 

অর্থনীতিবিদ এবং ব্যাংকাররা বলছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে এবং শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে নতুন স্কিম চালু করা জরুরি। সরকার এবং ব্যাংকগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

মূল্যস্ফীতির চাপে সঞ্চয় ভাঙছে শিক্ষার্থীরাও