ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:৩৬:২০ এএম

রপ্তানিতে প্রণোদনা পাচ্ছে ৪৩ খাত

১৭ জুলাই, ২০২৪ | ৫:০ পিএম

রপ্তানিতে প্রণোদনা পাচ্ছে ৪৩ খাত

রপ্তানির বিপরীতে দেশের ৪৩টি খাতকে নগদ সহায়তা ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য দেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ডলার এবং রিজার্ভ বৃদ্ধি পায় রপ্তানির মাধ্যমেই। বছরে এ খাতে সরকারের ব্যয় হয় প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা। গত পাঁচ অর্থবছরে মোট ৩৬ হাজার ৫১১ কোটি টাকার নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

 

তবে রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা ও প্রণোদনার অর্থ প্রকৃত ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন কি না কিংবা প্রকৃত রপ্তানির বিপরীতে দেওয়া হচ্ছে কি না, সেই বিতর্ক এড়াতে এবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, রপ্তানির বিপরীতে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রকৃতপক্ষে দেশে আসে, বাংলাদেশ ব্যাংক শুধুমাত্র সেই পরিমাণ অর্থ দেশের রপ্তানির পরিমাণ হিসাবে প্রকাশ করে থাকে। এ কারণে জিডিপি ও মাথাপিছু আয় কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এ ছাড়া রপ্তানির বিপরীতে যে নগদ আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে তা সঠিক রয়েছে।

 

জানা গেছে, রপ্তানির তথ্য নির্ভুল এবং প্রকৃত রপ্তানি কত হচ্ছে, সে লক্ষ্যে একটি ডাটা প্ল্যাটফর্ম চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে ইতোমধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়য়ের সহযোগিতা চেয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এ ছাড়া সঠিক তথ্য নিরূপনে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইপিবি সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করবে।

 

শুধু তাই নয়, রপ্তানির বিপরীতে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রকৃতপক্ষে দেশে আসে, বাংলাদেশ ব্যাংক শুধুমাত্র সেই পরিমাণ অর্থ দেশের রপ্তানির পরিমাণ হিসাবে প্রকাশ করে থাকে। মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির হিসাব করার সময় বিবিএস সব সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের এ হিসাবকেই বিবেচনায় নেয়। ফলে রপ্তানি কমে যাওয়া এবং এর ফলে জিডিপি ও মাথাপিছু আয় কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। উল্লেখ্য, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের চলতি হিসাব এবং আর্থিক হিসাবের কিছু ক্ষেত্রে উপাত্তের পুনর্বিন্যাস হয়েছে।


তবে দেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিতে এখনই প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা তুলে দেওয়ার সময় হয়নি। এ প্রসঙ্গে পোশাক রপ্তানিকারক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, রপ্তানি খাতের প্রণোদনা যাতে সঠিক ও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা পান সেই উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য পোশাক রপ্তানি খাত চাপের মুখে রয়েছে। তাই এ খাতের প্রণোদনা এখনই কমানো ঠিক হবে না। আশা করব, রপ্তানির নির্ভুল তথ্য প্রকাশ করে উদ্যোক্তাদের সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়া হবে।

 

নগদ সহায়তা সবচেয়ে বেশি পায় তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাত। দেশি সুতা ব্যবহার করে উৎপাদিত তৈরি পোশাক নতুন বাজারে রপ্তানি করলে একটি কারখানা সর্বোচ্চ নয় দশমিক এক শতাংশ নগদ সহায়তা পেয়ে থাকে। এ ছাড়া পাটপণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ১৫ শতাংশ, পাটজাত পণ্যে সাত শতাংশ এবং পাট সুতায় প্রণোদনা পাঁচ শতাংশ প্রদান করা হয়।

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ছয় হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আট হাজার ৬৮৯ কোটি, ২০২১-২২-এ আট হাজার ৭৮৫ কোটি, ২০২০-২১-এ ছয় হাজার ৬৪৬ কোটি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছয় হাজার ৩৯১ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

রপ্তানিতে প্রণোদনা পাচ্ছে ৪৩ খাত