ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:৫৫:৪৭ এএম

রাজস্ব আয় বাড়াতে সরকারের নতুন উদ্যোগ

১৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:১১ এএম

রাজস্ব আয় বাড়াতে সরকারের নতুন উদ্যোগ

ছবি: সংগ্রহ

 

দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ক্ষমতার পালাবদলের ধাক্কা লেগেছে রাজস্ব খাতে। পতিত স্বৈরসরকারের রেখে যাওয়া নানা জঞ্জাল কাটিয়ে আর্থিক খাতকে সচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অত্যন্ত বেগ পেতে হচ্ছে বলে মনে করে অর্থ বিভাগ। এ ছাড়া ব্যবসাবাণিজ্যের অচলাবস্থার কারণেও রাজস্ব খাত স্বাভাবিক গতি পাচ্ছে না।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাক। একদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা ডলার সংকটও কাটছে না। অন্যদিকে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, প্রশাসনিক অচলাবস্থা, ব্যাংক খাতের অচলাবস্থার কারণে বাজেট বাস্তবায়নও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।  যা আগে থেকে বাজেটে ছিল না। ফলে এসব খরচকে বাজেটে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

 

আবার আয় কম হওয়ার কারণে বিশাল আকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিও ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। ফলে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের প্রতি নির্ভরতা বাড়ছে। ইতোমধ্যে অর্থবছরের চার মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ৫৯ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। এ ঋণের বেশির ভাগ চলে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে। ফলে দেশি-বিদেশি যে কোনো উৎস থেকে আয় বাড়াতে মরিয়া হয়ে পড়েছে সরকার। অন্যথায় বাজেট বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

 

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে সাধারণ ছুটির পাশাপাশি কারফিউ ছিল বেশ কয়েক দিন। এ সময় কলকারখানা ও সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকে। এসবের প্রভাব পড়ে শুল্ক-কর আদায়ে। গত ৮ আগস্ট নতুন সরকার গঠিত হলেও নানা ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা ছিল। বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণি দাবিদাওয়া নিয়ে মাঠে নামে। ফলে অস্থিরতার মধ্যে কাক্সিক্ষত রাজস্ব আদায় করা যায়নি বলে জানিয়েছেন শুল্ক-কর কর্মকর্তারা। এমন অবস্থায় সামনের দিনগুলোতেও চলমান থাকবে বলে ধারণা করছে এনবিআর। তবে প্রশাসনিক সংস্কারগুলো ঠিকঠাক করতে পারলে দ্বিতীয় প্রান্তিকের পর রাজস্ব আদায়ের ধারায় কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মনে করে এনবিআর।

 

এদিকে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের জন্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তার প্রস্তাব তাদের বোর্ডে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আগামী মাসে অর্থ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে অর্থ বিভাগ। সেটা হলে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট কিছুটা হলেও প্রশমন হবে বলে মনে করে সরকার। আর্থিক খাতের সংস্কার দ্রুত করতে ও রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে ঋণের বিষয়ে আলোচনা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাংকের ৫০০ মিলিয়ন ডলার ও এডিবির ৬০০ মিলিয়ন ডলার। আগামী ডিসেম্বরে এসব ঋণ প্রস্তাব সংস্থা দুটির বোর্ড সভায় অনুমোদন পেতে পারে। যা ডিসেম্বরের মধ্যেই পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ।

রাজস্ব আয় বাড়াতে সরকারের নতুন উদ্যোগ