ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১:৪৫:১২ পিএম

রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভর করে জুলাই–নভেম্বরে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি

১১ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৪:২ পিএম

রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভর করে জুলাই–নভেম্বরে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি

ছবি: সংগ্রহ

বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্য বা ব্যালান্স অব পেমেন্টে চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে ৪৯.৫ শতাংশ ঘাটতি কমে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২.৪৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২.৪৩ বিলিয়ন ডলার কম।

 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি এই ঘাটতি হ্রাসে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বৈদেশিক ঋণ বা অনুদান থেকে তেমন প্রবৃদ্ধি না হলেও ঘাটতি কমেছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় থেকে এসেছে। এটি ভবিষ্যতে ঋণ পরিশোধের চাপ কমাবে।’’

 

 

চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে রপ্তানি ও আমদানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি ২০ শতাংশ কমে ৭.৮৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৯.৮৬ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও আমদানি হ্রাসের কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০.১ শতাংশ, আর আমদানি কমেছে ১.২ শতাংশ।

 

 

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘গত অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কম ছিল, কিন্তু এখন সেটি বেড়েছে। আমদানি হ্রাসের কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। তবে তিনি আশা করেন, বছর শেষে এটি ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে।’’

 

 

ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে চলতি হিসাবের ঘাটতি ৯৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২২৬ মিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩.৯৪ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১১.১৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে।

 

 

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির কারণে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ভালো দিক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে চলতি হিসাবের ঘাটতি বাড়ছিল, কিন্তু এবার তা কমে এসেছে, যা বাংলাদেশ অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক একটি পরিবর্তন।’’

 

 

ওভারডিউ রপ্তানি আয় এবং স্বল্পমেয়াদি লোনের বহিঃপ্রবাহ কমার কারণে চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে দেশের আর্থিক হিসাবের ঘাটতিও ২৩০ মিলিয়ন ডলার কমে ৫৮১ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৮১১ মিলিয়ন ডলার।

 

 

এই সব ইতিবাচক উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কেত হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করবে।

রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভর করে জুলাই–নভেম্বরে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি