ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:১৯:২৫ এএম

সব দাবি মেনে নেওয়া হলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৯:৪১ এএম

সব দাবি মেনে নেওয়া হলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের

ছবি: সংগ্রহ

গার্মেন্টস শ্রমিকদের যে ১৮ দফা দাবি ছিল তার সবই মেনে নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকার ও মালিকপক্ষের যৌথ বৈঠকে এসব দাবি মেনে নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এ তথ্য জানান। একই সঙ্গে তিনি জানান, আজ বুধবার থেকে সব গার্মেন্টস কারখানা খোলা হবে। আর দাবি মেনে নেওয়ার পরও যদি শিল্পে কোনো বিশৃঙ্খলা করা হয়, তা হলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

 

শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ ছাড়া বিজিএমইএ, বিকেএমইএর শীর্ষ নেতারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 

শ্রমিকরা যে ১৮ দফার দাবি দিয়েছিল তার সবই মেনে নেওয়া হয়েছে। দাবির মধ্যে ছিল-হাজিরা বোনাস, টিফিন ও নাইট বিল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়Ñসব পোশাক শিল্প কারখানায় শ্রমিকের বিদ্যমান হাজিরা বোনাস হিসেবে অতিরিক্ত ২২৫ টাকা রাত ৮টার পর বিদ্যমান টিফিন বিলের সঙ্গে ১০ টাকা এবং বিদ্যমান নাইট বিল ১০ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম ১০০ টাকা করা হবে।


নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়Ñআগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে সব কারখানায় সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

রেশনিং ব্যবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়-আপাতত শ্রমঘন এলাকায় টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিকেও শ্রমঘন এলাকায় সম্প্রসারিত করা হবে। শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী রেশন ব্যবস্থার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। এ ছাড়া বকেয়া মজুরি প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়-আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকের সব বকেয়া মজুরি বিনা ব্যর্থতায় দিতে। অন্যথায় শ্রম আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং : বিজিএমইএ থেকে বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করে শ্রমিকদের হয়রানির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে একটি টেকনিক্যাল টিম পর্যালোচনা করে অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।
ঝুট ব্যবসা : ঝুট ব্যবসা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব, চাঁদাবাজি বন্ধসহ শ্রমিকের স্বার্থ বিবেচনায় এ বিষয়ে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

মামলা প্রত্যাহার : ২০২৩ সালের মজুরি আন্দোলনসহ এর আগে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সব প্রকার হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলাগুলো রিভিউ করে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে। মজুরি আন্দোলনে নিহত চারজন শ্রমিকের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

বৈষম্যবিহীন নিয়োগ : কাজের ধরন অনুযায়ী নারী-পুরুষের বৈষম্যহীন যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান নিশ্চিত করা হবে।

 

জুলাই বিপ্লবে শহিদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা : জুলাই বিপ্লবে শহিদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসাসেবার জন্য শ্রমিক নেতারা একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে। প্রাপ্ত তালিকা প্রধান উপদেষ্টার দফতরের ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হবে।

 

রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিকার : রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিকারের উদ্দেশে ইতিমধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গঠিত কমিটি অক্টোবর ২০২৪-এর মধ্যে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করবে। প্রাপ্ত সুপারিশের আলোকে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন : শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে।
অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না : অন্যায় এবং অন্যায্যভাবে শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না।

 

নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি : নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করা হলো।

 

ন্যূনতম মজুরি পুনঃমূল্যায়ন : শ্রমিক ও মালিকপক্ষের তিনজন করে প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত অতিরিক্ত সচিবের (শ্রম) নেতৃত্বে একটি কমিটি নিম্নতম মজুরির বিধিবিধান ছয় মাসের মধ্যে সক্ষমতা পর্যালোচনা করবে।

 

শ্রম আইন সংশোধন : শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) পুনরায় সংশোধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিসেম্বর ২০২৪-এর মধ্যে সংশোধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

 

সার্ভিস বেনিফিট প্রদান : শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকের সার্ভিস বেনিফিট প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।

 

প্রভিডেন্ড ফান্ড : কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মাধ্যমে শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পন্ন অন্যান্য দেশের উত্তম চর্চার আদলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট : নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ কমিটি বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সক্ষমতা ও করণীয় বিষয়ে নভেম্বর ২০২৪-এর মধ্যে একটি সুপারিশ প্রদান করবে।

 

শ্রমিকদের সব নায্য দাবি মানা হয়েছে, উপদেষ্টা আসিফ : বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, পোশাক শ্রমিকদের যত ন্যায্য দাবি তা মানা হয়েছে। আমরা পূরণের জন্যই ১৮টি দাবির বিষয়ে সমাধানে পৌঁছেছি। শর্টটার্ম দাবিগুলো আজ থেকেই বাস্তবায়ন করা হবে। অন্যান্য দাবিগুলোও দেখা হবে। এখন শিল্পকে বাঁচানোর স্বার্থে কাল থেকেই সব কারখানা চালু রাখতে হবে।

 

তিনি বলেন, সব পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বিদ্যমান হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা বাড়ছে। সেই সঙ্গে আগামী অক্টোবরের মধ্যে সব কারখানায় সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়া ১০ অক্টোবরের মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষকে শ্রমিকদের সব বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে হবে। শ্রমঘন এলাকায় টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ এবং বকেয়া বেতন দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়াসহ শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে মালিকপক্ষ।

 

ওই বৈঠকে সরকার, বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়। শ্রমিক ও মালিকপক্ষের মধ্যে সমঝোতায় চূড়ান্তভাবে মেনে নেওয়া দাবি উপস্থাপন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান।

 

এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, এ খাতটিকে শুধু দেশ থেকেই নয়, দেশের বাইরে থেকেও নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। আমরা এখন সব পক্ষের সমঝোতায় এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, এখন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের যারা এই সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছেন তাদের আগে দায়ী করা হবে।

 

বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, বড় কারখানাগুলো অনেক দিন ধরেই বন্ধ। আমরা একটা সম্মিলিত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। আশা করছি কাল থেকে (বুধবার) সবাই কাজে যোগ দেবেন, কারখানা চালু করবেন। এর পরও কারও কথা থাকলে সেটি মালিকের সঙ্গে কারখানার ভেতরে বসেই আলোচনা করুন, রাস্তা বন্ধ করে, কোনো ভাঙচুর করে নয়। অনুষ্ঠানে শ্রমিক নেতা কুতুব উদ্দিন বলেন, মালিক-শ্রমিক মিলে সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, আমরা এখন শ্রমিক ভাইদের বলব কাল থেকে কাজে যোগ দিতে।

 

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব সফিকুজ্জামান বলেন, কারখানাগুলোতে যে আনরেস্ট চলছে তা গত সোমবার পর্যন্ত বন্ধ করা যায়নি। এর মধ্যেই সরকার, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ মিলে সিরিজ অব মিটিং করেছে। যেখানে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের ৩৫ জন করে সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের যেসব দাবি-দাওয়া পেয়েছি তার সংখ্যা আরও বেশি। এর মধ্যে ১৮টি দাবি পূরণে আমরা একমত হয়েছি। আশা করছি আগামীকাল থেকে সব কারখানা স্বাভাবিকভাবে চলবে।

আশুলিয়ায় উসকানির অভিযোগে গ্রেফকার ৮ : আশুলিয়া প্রতিনিধি রাকিব হাসান জিল্লু জানান, আশুলিয়াসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের মাধ্যমে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে বিভিন্ন কারখানায় ভাঙচুর, রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুরসহ নানা অভিযোগে আটজনকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী।

 

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. কামাল হোসেন। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-আশুলিয়ার দেওয়ান আবদুল হাই (৫২), টাঙ্গাইলের গোপালপুরের পাটলপাড়ার রনি (২৭), আশুলিয়ার মো. জাহিদুল ইসলাম (২৪), কুমিল্লার বড়ুরার শাহাপরান (৩৩), টাঙ্গাইলের নাগরপুরের মো. রাব্বি মিয়া (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের গুপ্তমানিক এলাকার মো. মিজানুর রহমান (৩৮), চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার আমনুরা জংশন এলাকার জাহিদুল (৩৮) ও আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার মো. শুক্কুর আলী (৪০)।

 

আশুলিয়ায় বেশিরভাগ কারখানা চালু, বন্ধ ৫৫ : আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ ফের বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন দাবিতে অন্তত ৫৫টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে অন্যান্য পোশাক কারখানা স্বাভাবিকভাবেই কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাঠে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

 

জানা যায়, নবীনগর-আশুলিয়া-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর, নিশ্চিতপুর, ঘোষবাগ এবং জিরাবো এলাকায় ৫৫টি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছে। এদের মধ্যে ৪৬টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ৯টি পোশাক কারখানায় সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও বিক্ষোভের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে কয়েকটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা সকালে কাজে যোগ দিতে এলে ১৩ (১) ধারায় বন্ধের নোটিস গেটে দেখতে পেয়ে বাসায় ফিরে যান। পোশাক শিল্প খাতে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে কারখানা বন্ধ রেখেছেন বলে দাবি মালিকপক্ষের।

 

গাজীপুরে ১৩ কারখানা বন্ধ : গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরে বেশিরভাগ পোশাক তৈরি কারখানায় উৎপাদন চলছে শান্তিপূর্ণভাবে। মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রতিটি কারখানার শ্রমিকরা যোগ দিয়েছেন। শিল্প এলাকাগুলোর পরিস্থিতি রয়েছে স্বাভাবিক। তবে শ্রমিক আন্দোলনের মুখে গত সোমবার বন্ধ ঘোষণা করা ১৩টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।

 

জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২১ আগস্ট ছয় দফা দাবিতে গাজীপুরে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন টঙ্গীর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। এরপর ধীরে ধীরে অশান্ত হয়ে ওঠে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল। নিজস্ব বিভিন্ন সৃষ্ট দাবিতে অন্যান্য কারখানাগুলোতে শুরু হয় আন্দোলন। থেমে থেমে প্রায় প্রতিদিনই চলে শ্রমিকদের এ কর্মসূচি। দাবি আদায়ে কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এসব কারণে সাধারণ ছুটি ও অনির্দিষ্টকালের জন্য অনেক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হয় অনেক কারখানার। এসব ঘাটতি পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছে কারখানা মালিকরা। গাজীপুর শিল্প পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে গত শুক্রবার বন্ধের দিনেও গাজীপুর মহানগর ও মহানগরের বাইরে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল। এসব কারখানায় উৎপাদন কাজ চলেছে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলো খোলার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

সব দাবি মেনে নেওয়া হলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের