ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১:৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সুপারশপে হলেও খোলাবাজারে বন্ধ হয়নি পলিথিন
৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১:৭ পিএম
![সুপারশপে হলেও খোলাবাজারে বন্ধ হয়নি পলিথিন](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/04/20250104125204_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরির উদ্যোগ নিতে এগিয়ে এসেছেন বেশ কিছু উদ্যোক্তা। তবে, পরিবেশ অধিদপ্তরের নানা অজুহাতের কারণে তারা এখনও প্রয়োজনীয় অনুমোদন পায়নি। ভুট্টার স্টার্চ দিয়ে তৈরি বায়োডিগ্রেডেবল (পচনশীল) ব্যাগ উৎপাদনে তিন বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন উদ্যোক্তারা, কিন্তু এখনও সেই অনুমোদন হাতে পাননি।
রাজশাহীর ক্রিস্টাল বায়োটেকসহ গোপালগঞ্জের জে কে পলিমার এবং চট্টগ্রামের আর্থ ম্যাটারস লিমিটেডের মতো প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরি করা হলেও তারা কার্যকর অনুমোদন পেতে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন।
রাজশাহীর ক্রিস্টাল বায়োটেকের স্বত্বাধিকারী ইফতেখারুল হক জানান, ‘‘আমরা তিন বছর ধরে আবেদন করেছি, কিন্তু এখনও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমতি পাইনি। আমাদের ব্যাগটি মাটিতে এক মাসের মধ্যে পচে যায় এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে, কর্মকর্তারা আমাদের বারবার নতুন নতুন অজুহাত দেখাচ্ছেন।’’
গোপালগঞ্জের জে কে পলিমারও তাদের কারখানায় ট্রায়াল চালাচ্ছে, তবে এখনও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়নি। প্রতিষ্ঠানটির প্রডাকশন ম্যানেজার মো. জিয়াউর রহমান জানান, ‘‘পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করলেও তারা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি, শুধু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে।’’
এদিকে, চট্টগ্রামের আর্থ ম্যাটারস লিমিটেডের উৎপাদিত পচনশীল ব্যাগ ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তা আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি করার অনুমতি তারা এখনও পায়নি। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সৈয়দ আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘‘আমাদের ব্যাগ পরিবেশবান্ধব এবং আমেরিকান মান অনুযায়ী পরীক্ষিত। তবে দেশে বিক্রির অনুমতি পাচ্ছি না, যা আমাদের ব্যবসার জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
এছাড়া, দেশের বাজারে পাটের ব্যাগ তৈরির জন্যও উদ্যোগ নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা, তবে তারা পাটের অপ্রতুলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। পাটের যথেষ্ট সরবরাহ না থাকায় চাহিদা মেটাতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত বছর জানিয়েছিলেন, ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে এবং ১ নভেম্বর থেকে খুচরা বাজারেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। তবে, খুচরা বাজারে পলিথিনের ব্যবহার কমানোর ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বাজারে পলিথিনের দাম কমেনি, বরং সরবরাহ আগের মতোই রয়েছে।
এছাড়া, সোনালি ব্যাগের উৎপাদনও এখনো বাণিজ্যিক রূপ পায়নি। পাটের আঁশ দিয়ে সোনালি ব্যাগ তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও নীতিমালা না পাওয়ায় এটি অন্ধকারে রয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘‘পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এটি সামুদ্রিক জীবনের জন্য বিপজ্জনক এবং দীর্ঘ সময় ধরে মাটিতে পচতে থাকে। তাই আমরা যেকোনো উপায়ে এই প্লাস্টিকের ব্যাগ বন্ধ করতে হবে।’’
তবে, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এই বিষয়ে পরিষ্কার মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাদের দাবি, ভুট্টার স্টার্চ দিয়ে তৈরি ব্যাগের জন্য আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া চলছে।
পরিবেশবান্ধব ব্যাগ উৎপাদন এবং পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে সরকারের নির্দেশনায় কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা গেলেও, বাজারে পরিবর্তন আনার জন্য আরো কার্যকর উদ্যোগের প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
- ট্যাগ সমূহঃ
- খোলাবাজারে
- বন্ধ
- হয়নি
- পলিথিন
![সুপারশপে হলেও খোলাবাজারে বন্ধ হয়নি পলিথিন](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)