ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:১৭:৩৭ পিএম

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:২১ এএম

অনলাইন সংস্করণ

সুবাতাস বইছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের পালে

৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:২১ এএম

সুবাতাস বইছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের পালে

ছবি: সংগ্রহ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দীর্ঘকালীন অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গত কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর প্রতি তীব্র আগ্রহ দেখা দিয়েছে এবং তারা একে অপরের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ও সাম্প্রতিক কূটনৈতিক যোগাযোগের ফলে সম্পর্কের ইতিবাচক পরিবর্তন এখন দৃশ্যমান।

 

 

প্রকৃতপক্ষে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরিবর্তিত গতিপথের প্রেক্ষাপটে, বিশেষত ভারত-বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।

 

 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ১ জানুয়ারি স্পষ্ট করে জানান, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং বাংলাদেশের ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেবল একক কোনো ইস্যুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

 

 

এদিকে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি বার্তা প received ছে এবং আশা প্রকাশ করেন যে এই বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে তৌহিদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন যে, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়টি শুধুমাত্র একটি ইস্যু, এবং দুই দেশের সম্পর্কের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোর ওপর কাজ করতে হবে।

 

 

ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য ভারতের অভিমুখের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, দুই দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য, বাণিজ্য, কানেকটিভিটি এবং অন্যান্য সক্ষমতা বৃদ্ধির খাতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে গভীরতর করার জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হবে।

 

 

গত কয়েক সপ্তাহে উভয় দেশ একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বিপরীতে ভারতও ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে পাঠিয়েছে। এছাড়াও, ভারত থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে ২৪ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চালের একটি চালান এসেছে, যা ভারতের সাথে সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

 

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতির লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ। দুই দেশের সম্পর্কের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, "ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক নিয়ে আমি আশাবাদী। পরস্পরের জন্য মঙ্গলজনক সম্পর্ক গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।"

 

 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অনুঘটকের ওপর, যেমন: অর্থনৈতিক স্বার্থ, ভূরাজনৈতিক গতিশীলতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরাপত্তা উদ্বেগ। তবে বর্তমানে যা স্পষ্ট, তা হল– দুই দেশই একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ, ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 

 

এছাড়া, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরের পরিপ্রেক্ষিতেও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে যে প্রতিকূলতা তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে এখন যৌথ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

 

 

এখানে যে চ্যালেঞ্জগুলো সামনে রয়েছে, তা পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা বাড়িয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সুবাতাস বইছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের পালে