ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ
সেবা হিসেবে এআইয়ের বাজার ছাড়াবে ২৯ হাজার কোটি ডলার
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৫ এএম
ছবি: সংগ্রহীত
২০২৪ সাল শেষে বিশ্বব্যাপী সেবা হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই অ্যাজ-আ-সার্ভিস বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ১৯৬ কোটি ডলার। অর্থের এ সংখ্যা ২০৩৪ সালের মধ্যে প্রায় ২৯ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে। এ সময়কালে বাজারের বার্ষিক বৃদ্ধির হার হবে ৩৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্স রিসার্চের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেবা বাজারের আকার সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দ্রুত বাড়ছে। এটি এমন প্রযুক্তি, যেখানে এআই সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা ও টুলস ক্লাউডের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। ফলে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ইনস্টল না করেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা নিতে পারে। প্রেসিডেন্স রিসার্চ বলছে, ২০২৩ সালে এ বাজারের মোট আয়ের ৪১ শতাংশ হিস্যা ছিল উত্তর আমেরিকার। তবে সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল শিগগিরই বাজারে নেতৃত্ব দেবে।
এআই সেবাকে তৃতীয় পক্ষের পরিষেবা বা থার্ড-পার্টি সার্ভিসও বলা হয়। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, কোম্পানিগুলো এটি ব্যবহার করে মূলত খরচ কমানোর জন্য। এছাড়া প্রযুক্তিটি মানুষের হস্তক্ষেপ কমিয়ে কাজকে দ্রুত, সময়সাশ্রয়ী ও সঠিক করে তোলে। ফলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
২০২২ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস করপোরেশন (আইবিএম) একটি জরিপ পরিচালনা করে, যেখানে সাড়ে সাত হাজার প্রতিষ্ঠানের ওপর গবেষণা করা হয়। এতে দেখা গেছে, ৩৫-৩৬ শতাংশ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে এআই ব্যবহার করছে। এছাড়া ৬৪ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মনে করে যে এআই সামনে উৎপাদনশীলতা আরো বৃদ্ধি করবে এবং ৪২ শতাংশ মনে করে এটি কাজের প্রক্রিয়া সহজতর করবে। ফলে এআইয়ের ওপর ব্যবসার নির্ভরশীলতার বৃদ্ধি এর পরিষেবা বাজারের সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
বাজারে প্রতিযোগিতার কারণে কোম্পানিগুলো আরো ভালো গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত এআই প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। বিশাল ডাটা নির্ভুলভাবে পরিচালনা করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠান বিশ্লেষণমূলক কাজে এআইয়ের সহায়তা নিচ্ছে। এ প্রবণতা পূর্বাভাসের সময়কালে ছোট ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। এআই-সেবা ব্যবহৃত হয় মূলত কাজের প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রিয় করতে, মানুষের হস্তক্ষেপ কমাতে। উৎপাদক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো প্রযুক্তিটির সহায়তায় পরিচালন খরচ কমাতে পারছে। ফলে কোম্পানির মুনাফাও বাড়ছে।
গত বছর ডাচ তথ্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ভল্টার্স ক্লুয়ারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রধান আর্থিক কর্মকর্তাদের (চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার বা সিএফও) মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বাড়ছে। সিএফওসহ আর্থিক কর্মকর্তাদের ৭০ শতাংশ ২০২৯ সালের মধ্যে এআই ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগে আগ্রহী। জরিপের তথ্যানুযায়ী, দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আর্থিক কর্মকর্তা এরই মধ্যে এআই কীভাবে তাদের আর্থিক কার্যক্রমে কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করছেন। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ এআই ব্যবহার শুরু করেছেন। তারা নিজেদের প্রকল্পগুলোকে সফল বলেও উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা এআইয়ের মাধ্যমে আর্থিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা স্বীকার করেছেন।
দ্য বিজনেস রিসার্চ কোম্পানির তথ্যানুযায়ী, সেবা হিসেবে এআইয়ের বাজারে শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো অ্যাপল ইনকরপোরেটেড, গুগল, মাইক্রোসফট করপোরেশন, ডেল টেকনোলজিস, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস, আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস, সিমেন্স এজি, ইন্টেল করপোরেশন, ওরাকল করপোরেশন, এনভিডিয়া, আর্ম লিমিটেডসহ আরো অনেক।