ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বাড়লেও ক্রেতা কমেছে
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৩০ পিএম
ছবি: সংগ্রহ
বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার দেখা মিলছে না। ফলে আমদানীকৃত চাল বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন অনেক আমদানিকারক। সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য টিসিবি এবং ওএমএসের মাধ্যমে খোলাবাজারে চাল বিক্রির কারণে চাহিদা কমে গিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দাবি চাল কিনতে আসা পাইকারদের।
জানা যায়, ধানের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে হঠাৎ করে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে চালের বাজার। দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সেই সঙ্গে প্রত্যাহার করা হয় আমদানি শুল্ক। এরপর ১১ নভেম্বর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিকে আমদানির পরিমাণ কম থাকলেও পরে তা বেড়েছে। বর্তমানে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০-৭০ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। তবে আমদানি বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা কমে গেছে। বিক্রি না হওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে চালবোঝাই ট্রাকগুলোকে আটকে থাকতে দেখা গেছে।
বন্দরে চাল কিনতে আসা পাইকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাধারণত দেশে চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলে ভারত থেকে চাল আমদানি করা হয়। বন্দর থেকে সেই চাল কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হতো। সে সময় আমদানীকৃত চালের চাহিদা যেমন ছিল, তেমনি দামও ভালো ছিল।’
তিনি দাবি করেন, বর্তমানে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য টিসিবির মাধ্যমে চাল বিক্রয় করছে। সেই সঙ্গে ওএমএসের মাধ্যমে কম দামে চাল বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন মোকামে চালের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে।
আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, ‘আগে যেসব মোকামে পাঁচ-সাত ট্রাক চাল পাঠাতাম, চাহিদা না থাকায় বর্তমানে সেখানে এক-দুই ট্রাক পাঠাচ্ছি। তার পরও অনেকে নিতে চাইছেন না, দাম কম বলছেন।’
চাল কিনতে আসা অন্য পাইকাররা জানান, বর্তমানে স্থলবন্দরগুলোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে জাহাজের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি হচ্ছে। শুধু ভারত নয়, বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আনা হচ্ছে। এছাড়া কৃষকের ঘরে পর্যাপ্ত চাল থাকায় তারাও কিনছেন না। এসব কারণে মোকামে চালের কেনা-বেচা কমে গেছে।
চাল আমদানি বাড়লেও বিক্রি কমে গেছে জানিয়ে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক মনির হোসেন বলেন, ‘বাইরের জেলা থেকে পাইকাররা আসছেন না। তাই ট্রাক থেকে চালও খালাস হচ্ছে না। চাল বোঝাই অনেক ট্রাক ৮-১৫ দিন ধরে আটকে থাকছে।’
দিন দিন চালের দাম কমে আসছে, এতে আমদানিকারকরা লোকসান গুনছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা কমে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে, তার পরও ক্রেতারা আসছেন না। এ অবস্থায় ট্রাকগুলো আটকে থাকায় ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। বন্দরের মাশুল ও ব্যাংকের সুদও বাড়ছে। সব মিলিয়ে চাল আমদানিকারকরা বেশ বিপাকের মধ্যে পড়েছেন।’
আমদানিকারকরা জানান, বন্দরে বর্তমানে স্বর্ণা চাল ২ টাকা কমে ৫১ টাকা, রত্না চাল ২ টাকা কমে ৫৭ টাকা এবং শম্পা কাটারি চাল ৩ টাকা কমে ৬৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম জানান, এ বন্দর দিয়ে ১১ নভেম্বর থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ২ হাজার ৬৯৪টি ট্রাকে ১ লাখ ৯ হাজার ৮১৬ টন চাল আমদানি হয়েছে।