ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৬:১৯:২৩ পিএম

পাম অয়েলের শুল্ক কমানোর ফলে মণে ১৫০ টাকা কমলো

৭ অক্টোবর, ২০২৪ | ৫:৩৫ পিএম

পাম অয়েলের শুল্ক কমানোর ফলে মণে ১৫০ টাকা কমলো

ছবি: সংগ্রহ

আগামীতে উৎপাদিত পাম অয়েলের বাড়তি ৫ শতাংশ বায়ো ডিজেল উৎপাদনে ব্যবহার করবে ইন্দোনেশিয়া। এ খবরে দুই মাসের ব্যবধানে বিশ্বব্যাপী পাম অয়েলের বুকিং দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। দুদিনের ব্যবধানে পাম অয়েলের দাম কমেছে মণে ১৫০ টাকা। সরবরাহ সংকটের মধ্যেও শুল্ক কমানোর খবরে দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

 


দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশীয় রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পাম অয়েলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল। ৫-১০ অক্টোবর পাইকারি পর্যায়ে মণপ্রতি পাম অয়েলের  দাম ছিল ৪ হাজার ৮০০ টাকার আশপাশে। প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে পাম অয়েলের বাজার বেড়ে মণপ্রতি ৫ হাজার ৯০০ টাকায় উঠে যায়। অর্থাৎ এ সময় পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণে ১ হাজার ১০০ বা কেজিপ্রতি ২৯ টাকা।

 


বাজার সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে বুকিং দর কেজিপ্রতি ১৮ টাকার মতো বাড়লেও দেশের বাজারে বেড়েছে প্রায় ২৯ টাকা। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক সংকটের কারণে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় একটি ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় নিত্যপণ্যটির দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

 

পাইকারি বাজারটির ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান ও ব্রোকারদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, গতকাল বিকাল পর্যন্ত মণপ্রতি পাম অয়েল লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৭৫০ টাকায়। বৃহস্পতিবার পাম অয়েলের বুকিং সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। যদিও দাম নিয়ন্ত্রণে ভোজ্যতেল ও চিনির শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার, এমন খবরে দাম কমতে থাকে। শনিবার দামের ওঠানামার পর শেষ পর্যন্ত ৫ হাজার ৮০০ টাকায় বাজার শেষ হয়। গতকাল সকালে পাম অয়েলের ক্রেতা কমে যাওয়ায় বাড়তি সরবরাহ চাপে পাইকারি বাজারে দাম আরো ৫০ টাকা কমে যায়। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে পাম অয়েলের বাজার স্থিতিশীলতায় ফিরবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদা ২৫-২৮ লাখ টন। এর ৯০ শতাংশ আমদানি হয় বিশ্ববাজার থেকে। আবার ভোজ্যতেলের মধ্যে ৭০ শতাংশ পাম অয়েলের ব্যবহার হয়। পাম অয়েল আমদানি হয় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। অন্যদিকে ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন আমদানি হয়। দেশে নিত্য ভোগ্যপণ্যের মধ্যে প্রভাব বিস্তারকারী ভোজ্যতেলের দাম অন্যান্য পণ্যের ওপরও প্রভাব ফেলে। 

 

ট্রেডিংইকোনমিকসডটকমের তথ্যমতে, চলতি বছরের ৫ আগস্ট বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত পাম অয়েলের বুকিং ছিল ৩ হাজার ৬৮০ দশমিক ৬০ রিঙ্গিত। ১১ সেপ্টেম্বর বুকিং বেড়ে উঠে যায় ৩ হাজার ৭২৫ দশমিক ৯০ রিঙ্গিতে। ৩০ সেপ্টেম্বর বুকিং দর আরো বেড়ে ৪ হাজার রিঙ্গিত ছাড়িয়ে যায়। যদিও সর্বশেষ ৬ অক্টোবর পাম অয়েলের বুকিং দর রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে ৪ হাজার ৩১০ দশমিক ৩ রিঙ্গিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ দুই মাসের ব্যবধানে অপরিশোধিত পাম অয়েলের আন্তর্জাতিক দাম বেড়েছে প্রায় ৬৩০ রিঙ্গিত। পাশাপাশি বৈশ্বিক সংকটে টনপ্রতি শিপিং চার্জ ১০-১৫ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় দেশে ভোজ্যতেলের দামে প্রভাব ফেলেছে। পাম অয়েলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে পাইকারিতে সয়াবিনের দামও মণপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা বেড়ে ৬ হাজার ৩০০ টাকায় উঠে গেছে।

পাম অয়েলের শুল্ক কমানোর ফলে মণে ১৫০ টাকা কমলো