ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:১১:৫২ পিএম

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘অর্থনীতির শ্বেতপত্র’ হস্তান্তর আজ

১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৫৭ এএম

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘অর্থনীতির শ্বেতপত্র’ হস্তান্তর আজ

ছবি: সংগ্রহীত

আগামী রোববার (১ ডিসেম্বর) দেশের অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেবে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এই তথ্য জানান কমিটির প্রধান অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরদিন সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

 

 

রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে দেশের আর্থিক খাত ও বাজেট ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিগত সরকারের সময়ে দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়া হয়েছে। তবে বর্তমান সরকার কেন এই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেনি বা লুণ্ঠিত ব্যাংক ঋণ সমন্বয়ে সম্পদ অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়নি, তা প্রশ্নবিদ্ধ।

 

 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, আর্থিক খাতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ থাকলেও জনগণের উদ্বেগ কাটছে না। তিনি বলেন, মানুষের ধৈর্য সীমিত এবং সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের তাৎক্ষণিক ফলাফল আসছে না বলে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি অতীতে ইআরএফের একটি অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেছিলেন, “ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।” এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার শ্বেতপত্রে স্পষ্ট করা হবে, কোন ডাল পচা ছিল এবং কোনটি ভালো।

 

 

শ্বেতপত্রে দেশের অর্থনীতির দুই ফুসফুস হিসেবে ব্যাংক ও জ্বালানি খাতের ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হবে। দেবপ্রিয় বলেন, সাধারণ মানুষের চেয়ে পরিস্থিতি অনেক বেশি জটিল। এই সমস্যা উত্তরণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন।

 

 

রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) পরিচালিত এক জরিপে জানা গেছে, বাজেট ব্যয়ে স্বচ্ছতার হার মাত্র ৩৭ শতাংশ, যা ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় কম। প্রবন্ধ উপস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে গৃহীত বেপরোয়া নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে। তবে ব্যাংক থেকে লুটপাট ও চুরি বন্ধ হওয়ায় সামনের দিনগুলোতে এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে।

 

 

প্রথম আলোর অনলাইন বিভাগের প্রধান শওকত হোসেন মাসুম বলেন, মূল্যস্ফীতি রাতারাতি কমানো সম্ভব নয়। জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট রয়েছে। বেসরকারি খাত ও সরকারের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতিও সমস্যাকে ঘনীভূত করেছে।

 

 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ন ফোরাম গঠনের পরামর্শ দেন। এতে দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনঃস্থাপিত হবে। একইসঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও তদারকি বৃদ্ধির পাশাপাশি রিজার্ভ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে এসেছে।

 

 

সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কার্যকর করতে এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সমন্বিত কার্যক্রম জরুরি। শ্বেতপত্রে প্রকাশিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের পথ প্রশস্ত হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘অর্থনীতির শ্বেতপত্র’ হস্তান্তর আজ