ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৩:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ যাবে না, নেপাল–ভুটানকে নিয়ে পর্যটন মেলা করবে ভারত
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৩:২৫ পিএম
![বাংলাদেশ যাবে না, নেপাল–ভুটানকে নিয়ে পর্যটন মেলা করবে ভারত](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/12/17/20241217152343_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অংশীদাররা এ বছর পশ্চিমবঙ্গে অনুষ্ঠিত অষ্টম বেঙ্গল ট্রাভেল মার্টে (বিটিএম) অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের এই মেলায় নেপাল ও ভুটান অংশগ্রহণ করছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া-এর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
মেলায় পশ্চিমবঙ্গ, ভারতের অন্যান্য রাজ্য এবং প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও ভুটানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো তুলে ধরা হবে। মেলাটি আয়োজন করছে ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (ইএইচটিটিওএ)। এতে সহযোগিতা করছে ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়।
মেলায় বাংলাদেশের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান সন্দীপন ঘোষ বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা এ বছর বিটিএম-এ যোগ দেবেন না।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ ও রাজ্যের অন্যান্য অংশসহ সিকিমে বাংলাদেশি পর্যটকদের আগমন বন্ধ হয়ে গেছে। গত বছর অক্টোবর পর্যন্ত সিকিম এবং এর আশপাশের এলাকায় ২৭ হাজারের বেশি বাংলাদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন।
ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, ২০১৮ সাল থেকে উত্তরবঙ্গে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, কারণ ভারত সরকার তাদের সিকিম সফরের অনুমতি দিয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশি পর্যটকরা একসঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও সিকিম ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেই পর্যটন বন্ধ হয়ে গেছে।
দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশি পর্যটকদের আগমন বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন সীমান্তের উভয় পাশের পর্যটন খাতকে প্রভাবিত করেছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের অনেক মানুষ, যারা বাংলাদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন, তারাও তাদের ভ্রমণ বাতিল করেছেন।’
কোভিড-১৯ মহামারির সময় ভারত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পে ব্যাপক ধস নেমেছিল। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটন শিল্প। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব সেই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় বড় ধাক্কা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে এবারের বেঙ্গল ট্রাভেল মার্টের মূল ফোকাস থাকবে ভুটান ও নেপালের পর্যটন শিল্পের ওপর। প্রথমবারের মতো ভুটানের পর্যটন শিল্পের প্রতিনিধিরা এই মেলায় অংশগ্রহণ করছেন।
ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘ভুটানের হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (এইচআরএবি) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। ৭ লাখ ৮০ হাজার মানুষের দেশ ভুটান একটি প্রধান পর্যটন গন্তব্য। চলতি অর্থবছরে প্রায় ৫ লাখের বেশি পর্যটক ভুটানে ভ্রমণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই ভারতীয় পর্যটক।’
নেপাল টুরিজম বোর্ডের সিনিয়র ম্যানেজার সূর্য থাপালিয়া জানান, এই মেলায় নেপালের পূর্বাঞ্চলের পর্যটন স্থানগুলো তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, ‘পূর্ব নেপালে পর্যটকেরা মন্দির ও ধর্মীয় স্থান, বনভূমি ঘুরে দেখতে পারেন এবং হিমালয়ের পটভূমিতে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। বিটিএম এই স্থানগুলো প্রদর্শনের জন্য একটি সঠিক প্ল্যাটফর্ম, যাতে আরও বেশি ভারতীয় পর্যটক এই গন্তব্যগুলোতে আসেন।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর পর্যটন শিল্পে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। বেঙ্গল ট্রাভেল মার্টে বাংলাদেশের অনুপস্থিতি শুধু সীমান্তবর্তী পর্যটন নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক পর্যটন সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মেলায় ভুটান ও নেপালের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গের পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারের নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
![বাংলাদেশ যাবে না, নেপাল–ভুটানকে নিয়ে পর্যটন মেলা করবে ভারত](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)