ঢাকা শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ - ১২:০৮:৫২ পিএম

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

২০ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০:৬ এএম

অনলাইন সংস্করণ

বাকুতে কপ২৯: বাংলাদেশের ভূমিকা ও জলবায়ু অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ

২০ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০:৬ এএম

বাকুতে কপ২৯: বাংলাদেশের ভূমিকা ও জলবায়ু অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ

ছবি: সংগ্রহীত

কপ২৯ সম্মেলনে বাংলাদেশ: জলবায়ু অর্থায়ন ও ঝুঁকি মোকাবিলায় নতুন কণ্ঠস্বর

আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশের জনগণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এবারের সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ সম্মেলনে দেশের গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে।

 

পটুয়াখালীর দুলালী বেগম এবং বরিশালের কৃষক জাকির হোসেনের মতো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার গল্প বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের জলবায়ু সংকটের বাস্তবতা তুলে ধরেছে। দুলালী জানান, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে তাদের জীবিকা ধ্বংস হয়ে গেছে। জাকির হোসেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি খাতের ঝুঁকি ও এর অর্থায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাদের বার্তা ছিল স্পষ্ট: ক্ষুদ্র কৃষকদের সহায়তা ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

 

 

অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা

কপ২৯ সম্মেলনে বাংলাদেশের লক্ষ্য একটি কার্যকর আন্তর্জাতিক তহবিল ব্যবস্থা তৈরি করা। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল জানায়, জলবায়ু বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষেত্রে তহবিল বরাদ্দ নিশ্চিত করা জরুরি। যদিও ধনী দেশগুলো ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

 

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, প্রকল্প তৈরির সক্ষমতা বাড়িয়ে বৈশ্বিক তহবিল থেকে সুবিধা পেতে বাংলাদেশকে উদ্যোগ নিতে হবে। এদিকে পরিবেশবিদ রিজওয়ানা হাসান জানান, অভিযোজন কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রতিবছর ৮.৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, অথচ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।

 

 

বৈশ্বিক অর্থায়ন এবং এলডিসি জোটের ভূমিকা

পরিবেশ কর্মী বারিশ হাসান চৌধুরী জানান, এলডিসি জোটের মাধ্যমে উন্নত দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণের দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ না হলে জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত দেশগুলো দায়মুক্তির সুযোগ পাবে।

 

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে উচ্চ আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাবও আলোচনা হয়েছে। সরকার জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প খুঁজছে এবং সৌরশক্তি প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করছে।

 

জি-টোয়েন্টি দেশগুলোর বিবৃতি সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো সরাসরি অনুদানের দাবি জানালেও উন্নত দেশগুলো তা ঋণের মাধ্যমে কার্যকর করতে চাচ্ছে।

 

 

সম্মেলনের চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যত

বাংলাদেশসহ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো মনে করছে, জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন না আনলে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। জাতিসংঘ ও উন্নত দেশগুলোর প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।

বাকুতে কপ২৯: বাংলাদেশের ভূমিকা ও জলবায়ু অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ