ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:৫৩:০৯ এএম

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে এখনও আগের বিতর্কিত বিধান রয়ে গেছে: টিআইবি

৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৪:৩১ পিএম

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে এখনও আগের বিতর্কিত বিধান রয়ে গেছে: টিআইবি

ছবি: সংগ্রহ

সদ্য অনুমোদিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর কিছু বিধান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি মনে করছে, এই অধ্যাদেশে পূর্বের বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু নির্বর্তনমূলক ধারা বহাল থাকায় এর অপব্যবহারের সম্ভাবনা থেকে গেছে।

 

আজ মঙ্গলবার  টিআইবি আয়োজিত 'সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪: টিআইবির পর্যালোচনা' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

 


টিআইবির মতে, অধ্যাদেশটি প্রণয়নের সময় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। ফলে এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। সংস্থাটি সরকারকে দ্রুত সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মতামত নিয়ে অধ্যাদেশ সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে।

 


মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এরশাদুল করিম, যিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন, উল্লেখ করেছেন, জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালককে বিচারবহির্ভূত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

 


এ ক্ষমতার ফলে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে তথ্য অপসারণ বা ব্লক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। তিনি সতর্ক করেন, এ ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে বাকস্বাধীনতা সংকুচিত হতে পারে।

 


অধ্যাদেশের ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিংয়ের যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য বা সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটিকে সাইবার বুলিং হিসেবে বিবেচিত করার কথা বলা হয়েছে।

 


ড. করিম বলেন, 'এ ধারা মানুষকে সমালোচনা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করতে পারে। এমনকি সাংবাদিকদেরও নিজস্ব দায়িত্ব পালনে বাধা তৈরি করবে।'


ধারা ২৫-এ আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্যহীন কোনো তথ্য প্রচার বা প্রকাশ করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

 

ড. করিমের মতে, এটি মামলার ব্যাখ্যা ও প্রয়োগে নানা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচলিত গুজবের ক্ষেত্রে এটি মামলা করার সুযোগ খুলে দেবে। সাইবার অপরাধ ও বাকস্বাধীনতার সংমিশ্রণ

 


ড. করিম আরও বলেন, 'অধ্যাদেশে সাইবার অপরাধ, সাইবার নিরাপত্তা ও কথাবার্তার জন্য অপরাধকে (স্পিচ অফেন্স) একত্রিত করা হয়েছে। এক আইনে এতকিছু জড়ানো আইনটির প্রয়োগ এবং কার্যকারিতাকে দুর্বল করবে।'

 


টিআইবি মনে করে, অধ্যাদেশে সংযোজন-বিয়োজন প্রয়োজন। সংস্থাটি সরকারকে দ্রুত সংশোধনী আনার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে সাইবার নিরাপত্তা এবং বাকস্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করা যায়।

 

 

গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করা হয়। সরকার দাবি করেছে, এটি সাইবার স্পেস সুরক্ষা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে এখনও আগের বিতর্কিত বিধান রয়ে গেছে: টিআইবি