ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ | ২:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
গত আট বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পরিবেশবান্ধব ‘সোনালী ব্যাগ’
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ | ২:১৯ পিএম
![গত আট বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পরিবেশবান্ধব ‘সোনালী ব্যাগ’](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/10/30/20241030141857_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
পরিবেশবান্ধব ও পচনশীল ‘সোনালী ব্যাগ’ উদ্ভাবন হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করা হয় শপিং ব্যাগটি। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) বিপণন শাখা থেকে জানা গেছে, এখনও স্বল্প পরিমাণে কিনতে পাওয়া যায় সোনালী ব্যাগ। তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে আনা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন শতকোটি টাকার বাজেট।
গত তিন দফায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীরা আসলে-গেলেও সেই বাজেটের দেখা পায়নি বিজেএমসি। তবে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, পরিবেশবিরোধী পলিথিন ব্যাগের রমরমা বাণিজ্যের বিপরীতে পরিবেশবান্ধব সোনালী ব্যাগ বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসতে না পারার নেপথ্যে কখনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের নিজস্ব স্বার্থ, কখনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাজ করেছে।
সূত্রগুলো বলছে, বর্তমান সরকারের সময়েও সংশ্লিষ্টরা গত ৮ বছরের ধারাবাহিকতার সুরেই কথা বলছেন। তারাও শতকোটি টাকার প্রজেক্ট বানিয়ে একনেকে পাঠিয়েছেন। তবে সোনালী ব্যাগ কবে আলোর মুখ দেখবে তা অজানাই রয়ে গেছে। যদিও নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, এইবার সোনালী ব্যাগ বাজারে আসবে, যদিও সময় লাগবে।
বিজেএমসির উপদেষ্টা বিজ্ঞানী মোবারক আহমদের কথার সূত্র ধরে গত সোমবার সকাল থেকে বিকাল অবধি বিজেএমসির বিপণন বিভাগসহ প্রতিষ্ঠানটির নানাবিধ জায়গায় গিয়ে এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন এই প্রতিবেদক। প্রথমেই বিপণন বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ইতালির এক ব্যবসায়ী ১০ কেজি পাটের তৈরি ব্যাগ ক্রয় করছেন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে সোনালী ব্যাগ তৈরির প্রস্তাব দেন। তবে সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
সোনালী ব্যাগ নিয়ে কালক্ষেপণের বিষয়ে জানতে কথা হয় বিজেএমসির উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি অভিমানের সুরে বলেন, ‘এ বিষয়ে যাকে জিজ্ঞেস করবেন বলবে প্রক্রিয়াধীন; কিন্তু আসলে এর কিছুই হয় না। অথচ এই উদ্ভাবন আমাদের দূষণ থেকে রক্ষা করতে পারবে। সোনালী ব্যাগ প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত পলিথিনের বিদায় সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, পরীক্ষামূলক যা তৈরি হচ্ছে, এতে সোনালী ব্যাগের বর্তমান দাম গড়ে ৫ থেকে ৬ টাকার মতো। বৃহৎ পরিসরে বাজারে তৈরি করলে দাম অনেক কমে আসবে।’
‘অনেকে পলিথিন নিয়ে ব্যস্ত আছেন; কিন্তু এই সোনালী ব্যাগের যে প্রযুক্তি তা দিয়ে অনেক প্লাস্টিকের প্যাকেটকেও বিদায় দেওয়া সম্ভব। যার বাজারমূল্য ওইসব প্লাস্টিকের তৈরি প্যাকেট থেকেও কম হবে,’ যোগ করেন তিনি।
আরেক কর্মকর্তার ভাষ্য, মির্জা আজম যখন পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, তখন ছিল আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। পরে মন্ত্রী হিসেবে ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক এলেও সেই জটিলতার অবসান হয়নি। তবে গোলাম দস্তগীর গাজী এলে কাজের অগ্রগতি হয়; কিন্তু তার ছেলেকে দিয়ে এই ব্যবসা করাবেন বলে সেই কাজ থেমে যায়। এখন অপেক্ষা নতুন কোনো গল্পের অপেক্ষা। এই দেশে গল্পের শেষ হয় না।
বিজেএমসি তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্পে ডেমরায় লতিফ বাওয়ানি জুট মিলসের জায়গায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনালী ব্যাগ উৎপাদনের জন্য পাইলট কারখানার প্রস্তাব করেছে। এ প্রকল্পে সীমিত আকারে বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
কথা হয় পাট ও বস্ত্র সচিব মো. আব্দুর রউফের সঙ্গে। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘উই আর ওয়ার্কিং অন দ্যাট (আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি)। এখনই মার্কেটে আনা সম্ভব নয়, কিছু সমস্যা আছে। সর্বশেষ বছরখানেক আগে আমরা বসেছিলাম। ব্যবসায়ীদের বলেছিলাম ইনভেস্ট করার জন্য। তখন তারা এর লাভ-লোকসান বুঝতে চান। সেই কস্টিং বোঝাতে হলে তো অটোমেটেড মেশিনপত্র লাগবে। এখন কাস্টমাইজ মেশিন দিয়ে তৈরি করে। আপনি গেলে দেখবেন, রাস্তার একপাশে পাট কেটে সেখানে মন্ড তৈরি করছে, অন্য পাশে ফ্যাক্টরি। দি ইজ নট দ্য প্রোডাকশন লাইন। প্রোডাকশন লাইন হবে এ রকমÑ এক পাশে কাঁচামাল দেব, অন্য পাশে শিট বের হয়ে যাবে। এ পর্যায়ে যেতে হলে যে মেশিনপত্র দরকার, তা আমরা কিনি নাই। আমাদের বিজ্ঞানী মহোদয় অনেক জায়গায় যোগাযোগ করেছেন। আমরা একটা প্রজেক্ট করেছি। এটা (একনেকে) চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। অনুমোদন হলে সেমি কমার্শিয়াল প্রক্রিয়ায় কাজ শুরু করব। এরপর বাজারে দেওয়ার বিষয়ে ভাবা যাবে।’
- ট্যাগ সমূহঃ
- পরিবেশবান্ধব
- ব্যাগ
![গত আট বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পরিবেশবান্ধব ‘সোনালী ব্যাগ’](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)