ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৩ এপ্রিল, ২০২৪ | ৯:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্ট
২৩ এপ্রিল, ২০২৪ | ৯:৪১ পিএম
![প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্ট](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/04/23/20240423214103_original_webp.webp)
পশ্চিমবঙ্গে স্কুল শিক্ষক নিয়োগে বেআইনি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার (২২ এপ্রিল) বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় এই নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মোঃ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ।
এছাড়া আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বেআইনিভাবে চাকরিপ্রাপকদের সুদসহ বেতনের টাকাও ফেরত নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ বেআইনি পথে যারা চাকরি পেয়ে এত বছর বেতন তুলেছেন, সুদ সহ সমস্ত টাকাই তাদের ফেরত দিতে হবে।
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কিত শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সেই মামলা আসে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে। দীর্ঘ সওয়াল জবাব শেষে সোমবার ২০১৬ সালে বেআইনিভাবে নিয়োগের গোটা প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত।
আদালত জানিয়েছে ২০১৬ সালে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সমস্ত নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এক ধাক্কায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এসএসসিকে জানিয়েছে আদালত। ২০১৬ সালের যতজন পরীক্ষা দিয়েছিল তাদের ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন) শিট এর মূল্যায়ন করা হবে এবং সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হবে যোগ্যদের।
কলকাতা হাইকোর্ট এও নির্দেশ দিয়েছে এই সম্পর্কিত সমস্ত নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তদন্তের স্বার্থে যাকে যাকে প্রয়োজন তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। যদিও হাইকোর্টের রায়কে বেআইনি বলে আখ্যায়িত করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। একই সাথে চাকরি যাওয়ার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন রায়গঞ্জের চাকুলিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে মমতা বলেন, যাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, চিন্তা করবেন না, হতাশ হবেন না, কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। আমরা সকলেই আপনাদের পাশে আছি এবং যতদূর লড়াই করার আমরা লড়াই করব।
তিনি ফের বলেন, আদালতের এই রায় সম্পূর্ণ বেআইনি। সেই কারণেই আমরা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি। শিক্ষক-শিক্ষিকা বা ছাত্রছাত্রীরা আপনারা কেউ চিন্তা করবেন না। যখন বিপদে পড়বেন তখন আর কেউ না থাকুক, আমি আছি।'
মমতা বলেন, ওদের একজন (সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী) বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে গেল। এটা তার অর্ডার ছিল। সুপ্রিম কোর্ট এটাকে খারিজ করে দিয়ে বলেছিল নতুন ডিভিশন বেঞ্চ করে আলোচনা করা হোক। আদালতের গোটা রায়টাকেই আমরা চ্যালেঞ্জ করছি, তার কারণ ২৬০০০ চাকরি বাতিল মানে প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আদালত বলছে যারা চাকরি করেছে চার সপ্তাহের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে হবে, এটা কি সম্ভব?' তৃণমূল প্রধান এও বলেন, গোটা ভারতে বেকারত্বের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
আর আমরা যাদের চাকরি দিচ্ছি আপনারা আপনাদের আইনের খোচায়...' শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই কারাগারে গিয়েছেন রাজ্যের সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সাবেক সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, এসএসসির সাবেক উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহা, এসএসসির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অশোক সাহা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, এসএসসির সাবেক চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য প্রমুখ।
ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ শহ গোটা দেশ জুড়ে চলছে লোকসভার নির্বাচন। মোট সাত দফায় হবে এই নির্বাচন। ইতিমধ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শেষ। রাজ্যের মোট ৪২ আসনে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্টের এই রায়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। কেউ কেউ বলছেন আদালতের রায়ের প্রভাব পড়তে পারে চলমান নির্বাচনেও।
![প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্ট](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)