ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:২৩:৪৯ এএম

বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করার দাবি বিভিন্ন মহলের

১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৪৫ এএম

বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করার দাবি বিভিন্ন মহলের

ছবি: সংগ্রহীত

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনযাত্রা এমনিতেই কঠিন হয়ে পড়েছে। তার ওপর শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। গতকাল শনিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়িক সংগঠন এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, মানুষের ক্ষুধার আগুন যখন দাউদাউ করে জ্বলছে, তখন সংস্কার নিয়ে কথা বলা অর্থহীন।

 

 

অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জময় পরিস্থিতিতে এমন শুল্ক বৃদ্ধি আত্মঘাতী হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতির এই ক্রান্তিকালে কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে।

 

 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সিদ্ধান্ত সীমিত আয়ের মানুষের জন্য মারাত্মক চাপ তৈরি করবে। ৫ টাকার জায়গায় ১৫ টাকা কর আরোপ করা সরকারের ভুল নীতির বহিঃপ্রকাশ। নয়াপল্টনে দলের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি।

 

 

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, টিস্যু পেপার, সাবান, মিষ্টি, ফলমূল, এবং ডিটারজেন্টের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে। রিজভী বলেন, জনগণ সরকারের ব্যর্থতা মেনে নিলেও তারা সরকারের প্রতি আস্থা হারাতে শুরু করেছে।

 

 

জাতীয় নাগরিক কমিটি শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির অধ্যাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, কর বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি এবং ব্যবসায় খরচ বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনে আরও দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে। টিসিবির ট্রাক সেল পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে তারা অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে।

 

 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যদি আইএমএফের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশ চালানো হয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে লড়াই হবে। তিনি বলেন, ক্ষুধার্ত মানুষ সংস্কারের কথা শুনবে না। সরকারের উচিত জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।

 

 

খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলন এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

 

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার সীমিত রিজার্ভ, আমদানি খরচ বৃদ্ধি, এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে।

 

 

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এবং ভ্যাট বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। সরকারকে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে টিসিবির ট্রাক সেল চালু এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জোরালো হচ্ছে।

বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করার দাবি বিভিন্ন মহলের