ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৪:৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বকেয়া ৪৭ হাজার কোটি টাকা
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৪:৭ পিএম
![বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বকেয়া ৪৭ হাজার কোটি টাকা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/02/02/20250202160834_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপুল পরিমাণ বকেয়া বিল এখন গুরুতর সংকটে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুরু হওয়া এই বকেয়া পরিশোধের চাপ এখনও নিরসিত হয়নি, বরং এর পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাওনা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর বকেয়া প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।
বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (বিপ্পা) সম্প্রতি বিদ্যুৎ সচিব ফারজানা মমতাজের সঙ্গে পাওনা বিল নিয়ে বৈঠক করেছে, তবে এখনও কোনো কার্যকর সমাধান পাওয়া যায়নি। বিপ্পা অভিযোগ করছে, বকেয়া বিল পরিশোধ না হলে গ্রীষ্ম ও রমজানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে, এবং লোডশেডিং পরিস্থিতি আরও তীব্র হতে পারে।
বিদ্যুৎ খাতের এই সমস্যার মধ্যে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকরা সরকারের কাছ থেকে করছাড়, ভর্তুকি, ঋণ সুবিধা এবং উচ্চ ক্যাপাসিটি চার্জ (রেন্টালভাড়া) পাওয়ার পরেও বকেয়া বিল পরিশোধ হচ্ছে না। তারা ফার্নেস অয়েল আমদানির শুল্ক কমানোর দাবিও জানিয়েছিল, তবে পরিস্থিতি এখনও সংকটপূর্ণ।
পিডিবির কাছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের পাওনা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা, এর মধ্যে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রেরই পাওনা ১০ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেল আমদানি করতে না পারলে, গ্রীষ্মে দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
এছাড়া, ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া বিলও প্রায় ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আদানি কোম্পানি জানিয়েছে, আগামী জুনের মধ্যে বিল পরিশোধ না হলে তারা বিলম্ব ফি মওকুফ করবে না।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের কারণে পেট্রোবাংলার কাছে শেভরন গ্যাস বিক্রি বাবদ প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে, এবং গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় পরিমাণ খুবই কম। দেশে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা অন্তত ৪০০ কোটি ঘনফুট হলেও সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ২৭০ কোটি ঘনফুট, যার মধ্যে ৯৭ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হয়।
বিশ্ব বাজারে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, ডলার সংকট এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের সরবরাহে ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। সরকারের যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তবে এই সংকট আগামী মাসগুলোতে আরও প্রকট হয়ে উঠবে এবং গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং ঘটবে, যা জনজীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এই সংকট দ্রুত সমাধান না হলে, দেশে বিভিন্ন শিল্প ও কৃষি খাতেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
- ট্যাগ সমূহঃ
- বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে
- বকেয়া
![বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বকেয়া ৪৭ হাজার কোটি টাকা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)