ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৪০ এএম
অনলাইন সংস্করণ
১৫ বছরে আইটি খাতের বহু টাকা অন্যত্র গেছে: অর্থ উপদেষ্টা
৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৪০ এএম
![১৫ বছরে আইটি খাতের বহু টাকা অন্যত্র গেছে: অর্থ উপদেষ্টা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/04/20250104102938_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, গত ১৫ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হলেও, সেই অর্থ কার্যকরভাবে আইটি খাতে খরচ হয়নি। বরং এই অর্থ চলে গেছে অন্য জায়গায়। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, আইটি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার না হওয়া দেশের উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "বর্তমান সরকার অনেকবার দাবি করেছে যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করা হয়েছে এবং উন্নতির মহাসড়কে নেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবে এ কাজগুলো সম্পন্ন হয়নি। আইটি খাতে আরও অনেক কাজ করা প্রয়োজন, এবং সেই জন্য বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি।"
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, সরকার আগামী মার্চ মাসের মধ্যে পুরো আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ করতে চায়। এর অংশ হিসেবে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি 'ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো' (এনএসডব্লিউ) সিস্টেম চালু করেছে, যা আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজতর করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখবে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে সাতটি কাস্টমস এজেন্সিকে একক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হবে।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "এনএসডব্লিউ চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এক অফিস থেকে অন্য অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে হবেনা। এর ফলে তাদের হয়রানি অনেকটা কমবে এবং আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও দ্রুত হবে।"
এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান অনুষ্ঠানে জানান, দেশের ১৯টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রায় ১১০ ধরনের সার্টিফিকেট ইস্যু করে থাকে, তবে সব ব্যবসায়ী সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। এখন থেকে এনএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা যেটি প্রয়োজন, সেটি সহজেই পাবেন। তিনি জানান, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এনবিআর সব কাগুজে সনদ সংগ্রহ বন্ধ করে দেবে এবং সমস্ত শংসাপত্র, লাইসেন্স ও পারমিট অনলাইনে নিতে হবে।
এছাড়া, এনএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। এসব সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে তাদের অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং ব্যবসায়ীরা এখন থেকে এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র এবং পারমিট অনলাইনে গ্রহণ করতে পারবেন।
২০১৭ সালে এনবিআর ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ প্রকল্প চালু করে। এর উদ্দেশ্য হলো কাস্টমস-সংক্রান্ত ১৯টি সংস্থার কার্যক্রম একত্রিত করা। এনএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্ম কাগজপত্রের ঝামেলা দূর করে এবং সময় বাঁচিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম আরও সহজ করে তুলবে। এতে ব্যবসায়ীরা কাগজপত্র, সময় এবং খরচ কমাতে সক্ষম হবে। এছাড়া, এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-সম্পর্কিত পারমিট, লাইসেন্স, শংসাপত্র এবং শুল্ক ঘোষণার প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় করবে।
বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নির্মিত এই প্ল্যাটফর্ম, কর ফাঁকি রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে আমদানিকারক এবং রপ্তানিকারকরা প্রয়োজনীয় তথ্য অনলাইনে জমা দিয়ে শংসাপত্র, লাইসেন্স ও পারমিট নিতে পারবেন। এর ফলে পণ্য দ্রুত খালাস করা সম্ভব হবে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।
এনবিআর জানিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরো ১২টি সংস্থাকে এনএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হবে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও সহজ ও আধুনিক করবে।
![১৫ বছরে আইটি খাতের বহু টাকা অন্যত্র গেছে: অর্থ উপদেষ্টা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)